সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: রবিবার ভুটান পাহাড়ের নেমে আসা জলে আলিপুরদুয়ারের একাধিক এলাকা প্লাবিত হয়। ভুটান থেকে আসা জলে জেলার তোর্সা, শিসামারা, সংকোশ, রায়ডাক, গরম, কালজানি ও হলং সহ জেলার একাধিক নদীতে জল বেড়ে যায়। তোর্সা ও গোবরজ্যাতি নদীর জলে প্লাবিত হয় জয়গাঁর ছোট মেচিয়াবস্তি, দলসিংপাড়া ও রণবাহাদুর বস্তি। জয়গাঁয় তোর্সা নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনে জেডিএ কর্তৃপক্ষ।
তোর্সা, হলং ও শিসামারার জলে প্লাবিত হয় জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান। তাতে তোর্সার জলের স্রোতে ভেসে যায় গন্ডার ও হরিণ সহ অসংখ্য বন্যপ্রাণী। জঙ্গল প্লাবিত হওয়ায় জলদাপাড়ায় রিসর্ট ও লজগুলিতে আটকে পড়েন পর্যটকরা। কুনকি হাতি নিয়ে পর্যটকদের খোঁজখবর নেন বনকর্মীরা। কয়েকজন পর্যটককে উদ্ধারও করা হয়। জলের তোড়ে উড়ে যায় হলং নদীর উপর কাঠের সেতুটি। এই ঘটনায় মাদারিহাট শহর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন জলদাপাড়া ট্যুরিস্ট লজের ২৫ জন পর্যটক।
এদিকে, জলদাপাড়ার ভিতরে বাঁধ ভেঙে শিসামারা নদীর জলে প্লাবিত হয়েছে আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের শালকুমার-১, ২ ও পূর্ব কাঁঠালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা। প্লাবিত এলাকার দুর্গতদের খাবারের জন্য শালকুমারে প্রশাসন ত্রাণ শিবির খোলে। জলের সঙ্গে ভেসে আসা ভুটানের ডলোমাইটে ঢেকে যায় তিনটি পঞ্চায়েত এলাকার আমনের খেতও।
এদিকে, শিসামারার প্লাবনে শিসামারার জঙ্গলে বেসরকারি রিসর্টগুলিতে থাকা প্রায় ১২৮ জন পর্যটক আটকে পড়েন। পর্যটকদের আটকে পড়ার খবর পেয়ে শালকুমারে ছুটে যান বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। শিসামারায় স্পিডবোট নামিয়ে পর্যটকদের উদ্ধার করে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা। সুমন বলেন, বার বার কেন্দ্রকে বলে আসছি ইন্দো-ভুটান যৌথ নদী কমিশন গঠন না করা হলে ডুয়ার্সে এই বিপর্যয় আটকানো যাবে না। কিন্তু কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আমাদের কথা শুনছে না। ভুটান পাহাড়ের নেমে আসা জলে ফুলে ওঠায় রায়ডাক ও সংকোশের জলে প্লাবিত হয়েছে কুমারগ্রামের অনেক এলাকা। কুমারগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের ধনতলি টাপুতেও জলবন্দি দুর্গতের জন্য প্রশাসনের তরফে ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে।
তবে, বিকেলের মধ্যেই সমস্ত এলাকা থেকে জল অনেকটাই নেমে যাওয়ায় স্বস্তি তৈরি হয়েছে। রবিবার রাতে ভুটান পাহাড়ে ফের বৃষ্টি হলে কী হবে, তা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে জেলাবাসীর। জেলাশাসক আর বিমলা বলেন, ভুটানের সঙ্গে যৌথভাবে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। শালকুমার ও ধনতলি টাপুতে দুর্গতদের জন্য ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে।