• আজ দোহালিয়ায় দক্ষিণা কালীর আবির্ভাব তিথি নিয়ে প্রস্তুতি তুঙ্গে
    বর্তমান | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কান্দি: দুর্গাপুজো যেতেই কান্দির দোহালিয়ায় দক্ষিণা কালী মন্দিরে দেবীর আবির্ভাব তিথি উপলক্ষ্যে পুজো ও যজ্ঞের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। দেবীর বিশেষ পুজো ছাড়াও রাতে হোমযজ্ঞ হবে। আজ, সোমবার দোহালিয়ায় দক্ষিণাকালীর পুজো নিয়ে মাতোয়ারা হবেন সবাই। অন্য বছরের মতো এদিনও এখানে ব্যাপক জমায়েতের আশা করছে মন্দির কমিটি।

    কয়েকশো বছরের প্রাচীন এই দেবী। এখানকার মন্দিরের সঙ্গে বাংলার রাজা লক্ষ্মণ সেন ও বল্লাল সেনের নামও জড়িয়ে রয়েছে। মন্দির কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময় এই এলাকা ঘন জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। এমনকী, ডাকাতদের বাসভূমিও ছিল দোহালিয়া। তবে কোনও এক সময় এখানে একজন সন্ন্যাসী ধ্যানমগ্ন হন। কথিত আছে, তাঁর ধ্যান ভাঙানোর জন্য অনেক চেষ্টা হয়েছিল। শেষমেশ দেবী দক্ষিণা কালী ব্যঘ্ররূপে ওই সন্ন্যাসীর সামনে আসেন। এরপর তখন থেকেই দেবীর ব্যঘ্ররূপী শিলামুর্তি দক্ষিণা কালী হিসেবে পুজিত হয়ে আসছে।

    আবার বাংলায় বর্গি হানার সময় রাজা লক্ষ্ণণ সেনও এই মন্দিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে কথিত আছে। পরবর্তীতে মন্দির নির্মাণে রাজা লক্ষ্ণণ সেন ও বল্লাল সেন সহযোগিতা করেছিলেন।

    এদিকে বছরের মাত্র একদিন দেবীর অন্নভোগে ভাত রাখা হয় এখানে। আর সেটি হল দেবীর আবির্ভাব তিথিতে। মন্দিরের পুরোহিত প্রকাশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, বছরের শুধুমাত্র এদিনেই দেবীর অন্নভোগে ভাত দেওয়া হয়। আর তাও সন্ধ্যার দিকে। অন্যান্য দিন খিচুরি ভোগ, ময়দার ভোগ দেবীকে দেওয়া হয়। তবে দেবীর অন্নভোগের ভাত ভক্তরা পান না। আবির্ভাব তিথিতে যে ছাগ বলি দেওয়া হয়। রাতের খিচুড়ি ভোগে ওই ছাগের বলির মাংস মিশিয়ে ভক্তদের দেওয়া হয়।

    আবার এলাকায় প্রচারিত যে, এদিন সন্ধ্যায় দেবী দক্ষিণা কালীকে কোজাগরী লক্ষ্মী হিসেবেও পুজো করা হয়। সেটা ভুল ধারণা বলে জানিয়েছেন ওই পুরোহিত। এক্ষেত্রে তিনি বলেন, হয়তো এদিন সন্ধ্যায় দেবীর অন্নভোগে ভাত রাখা হয় বলেই এমন নিয়ম প্রচলিত। কিন্তু দেবীকে লক্ষ্মীরূপে পুজো করা হয় না।

    এদিকে প্রতিবছর আবির্ভাব তিথীতে মন্দিরে ব্যাপক জমায়েত হয়ে থাকে। যে কারণে মন্দির কমিটির তরফে বিভিন্ন ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে বলে দাবি। মন্দির চত্বর আলোকসজ্জায় সাজানোর সঙ্গে, পর্যাপ্ত পানীয় জল, মেডিক্যাল টিম মজুত রাখা হয়। একটি স্বেচ্ছাসেবী দলও তৈরি রয়েছে। 

    মন্দির কমিটির সম্পাদক গৌরব চট্টোপাধ্যায় বলেন, এদিন বহু দূর থেকে প্রচুর ভক্ত আসেন। তাঁরা আত্মীয় পরিজনের বাড়ি থেকে স্থানাীয় হোটেগুলিতে বিশ্রাম নেন। তবে রাতের দিকে মন্দির চত্বরে ব্যাপক জমায়েত হয়। আমরা প্রস্তুত রয়েছি। 

     কান্দির দোহালিয়া দক্ষিণা কালী মন্দির। (ইনসেটে) প্রতিমা। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)