বিসর্জনের শোভাযাত্রায় মারপিট তারাপীঠে ধৃত পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী সহ ৫
বর্তমান | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রাকে ঘিরে দু’পক্ষের হাতাহাতি, পথ আটকানো ও খুনের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল তারাপীঠের সাহাপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান শিউলি মণ্ডলের স্বামী দেবীপ্রসাদ মণ্ডল সহ পাঁচজনকে। দেবীপ্রসাদ এলাকার তৃণমূল নেতা তথা রামপুরহাট-২ ব্লক সভাপতি সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের সম্পর্কে বেয়াই। রবিবার ধৃতদের রামপুরহাট আদালতে তোলা হয়। সরকারি আইনজীবী মণিরুল ইসলাম বলেন, বিচারক অভিযুক্তদের জামিনের আর্জি খারিজ করে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তারাপীঠের দক্ষিণপাড়া ও শরৎপল্লির পুজো কমিটির মধ্যে অনেকদিন ধরেই রেষারেষি চলে আসছে। পুজোর দিনগুলিতে দু’পক্ষই একে অপরের প্রতি ক্ষোভে ফুঁসছিল। শুক্রবার রাতে তারাপীঠের রাস্তায় তিনটি দুর্গাপুজো কমিটির প্রতিমা নিরঞ্জনের শোভাযাত্রা বের হয়। ওই সময় দক্ষিণপাড়ার পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য দেবীপ্রসাদ নিরঞ্জনের শোভাযাত্রা দ্বারকা নদের ব্রিজের উপর বেশ কিছুক্ষণ ধরে দাঁড় করিয়ে রাখে বলে অভিযোগ। যার ফলে শরৎপল্লি ও আরও একটি নিরঞ্জনের শোভাযাত্রা আটকে পড়ে। একইভাবে দাঁড়িয়ে যায় অ্যাম্বুলেন্স। অভিযোগ, পুলিশের পক্ষ থেকে শোভাযাত্রা সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলেও শোনেননি দেবীপ্রসাদ। ঘণ্টাখানেক শোভাযাত্রা দাঁড়িয়ে থাকে। পুলিশের সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদেও জড়িয়ে পড়েন দেবীপ্রসাদ। এদিকে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর বাকি দুই পুজো কমিটি ঘুরপথে শোভাযাত্রা নিয়ে যায়। সেই সময় পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ ওঠে।
এই ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় শরৎপল্লির বাসিন্দা রুদ্রদেব বাইন দেবীপ্রসাদ সহ ছ’জনের নামে মারামারি, পথ অবরোধ ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ তুলে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই মতো রবিবার রাতে এক অভিযুক্তকে পুলিশ আটক করে। খবর পেয়ে দেবীপ্রসাদ ও তাঁর স্ত্রী প্রধান সহ বাকি অভিযুক্তদের পরিবার ও এলাকাবাসীদের কয়েকজন থানায় এসে বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তবে, রবিবার সকালে দেবীপ্রসাদ সহ আরও চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
প্রধানকে ফোন করা হলে তাঁর মেয়ে স্বেতাদ্রি মণ্ডল বলেন, শোভাযাত্রায় আমিও ছিলাম। কোনও মারামারি, হাতাহাতি হয়নি। অ্যাম্বুলেন্স আটকে ছিল। কিন্তু ১০ মিনিটের মাথায় বক্স বন্ধ করে অ্যাম্বুলেন্স পার করিয়ে দেওয়া হয়। যে অভিযোগ করেছে, সে নাকি পেশায় ঢাকি। সে পাঁচ অভিযুক্তকে চেনেও না। অথচ নাম দিয়ে অভিযোগ করেছে। থানায় যাওয়া হলে পুলিশও খারাপ ব্যবহার করে। তাঁর দাবি, কেউ বাবার প্রতি ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে ওই ঢাকিকে দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছে। যদিও বেয়াই গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে সুকুমারবাবুকে ফোন করা হলে তিনি কিছুই বলতে চাননি। অন্যদিকে, কিছুই জানেন না বলে জানান শরৎপল্লি পুজোর উদ্যোক্তা তথা আইএনটিটিইউসির নেতা প্রেমানন্দ মণ্ডল।