• মা লক্ষ্মীর কাছে প্রার্থনাতেই ধানের ফলন বাড়ে মেদিনীপুরে পাত্রদের
    বর্তমান | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: জমিতে বারবার ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। তাতেই মাথায় হাত ওঠে পাত্র পরিবারের সদস্যদের। তবে ত্রাতা হয়ে দাঁড়ালেন স্বয়ং লক্ষ্মীদেবী। কারণ, মা লক্ষ্মীর কাছে প্রার্থনাতেই মিলল সুফল। সেই বছর থেকেই বাড়তে থাকে ধানের ফলন। এরপর মা লক্ষ্মীকে প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় শুরু হয়ে যায় কোজাগরীর আরাধনা। মেদিনীপুর সদর ব্লকের গোপগ্রামের পাত্রবাড়ির লক্ষ্মীপুজোর ইতিহাস কিন্তু এমনই। ইতিমধ্যেই গোটা গ্রামে ধনদেবীর আরাধনার প্রস্তুতি তুঙ্গে। গ্রাম জুড়ে সাজ সাজ রব। এছাড়াও এবছর পুজোয় থাকছে কলকাতার চিৎপুরের যাত্রা প্রদর্শন। গ্রামের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, যাত্রা পালার পাশাপাশি গ্রামেই পুজো ঘিরে মেলা বসে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা পসরা সাজিয়ে বসতে শুরু করেছেন মেলায়। এবছর নবদ্বীপ থেকে আসছে কীর্তনের একটি দল। একইসঙ্গে প্রায় দুই হাজার মানুষের জন্য ভোগপ্রসাদের বন্দোবস্ত থাকছে।

    পাত্রবাড়ির কর্তা বলাইচন্দ্র পাত্র বলেন, ঝাড়গ্রাম থেকেও মানুষ আসেন লক্ষ্মীঠাকুর দর্শন ও মেলা দেখতে। কলকাতার দলের যাত্রা দেখতেও অনেকেই আসেন। 

    সালটা ১৯৬১। বলাইবাবুদের প্রায় পাঁচ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এছাড়া জমিতে ধানের ফলনও কম হতো। জমিতে ধানের ফলন দেখতে গিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন বলাইবাবু। সেই সময় তাঁর কানে ভেসে আসে শঙ্খধ্বনি। মন খারাপের মাঝেই তিনি এক চাষিকে জিজ্ঞাসা করেন কি পুজো হচ্ছে। তখন সেই চাষি বলেন, লক্ষ্মীদেবীর আরাধনা। জানা গিয়েছে, সেইসময় বলাইবাবু মা লক্ষ্মীর কাছে প্রার্থনা জানিয়ে বলেন, ধান সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমি আপনার পুজো করব। ঠিক পরের বার থেকেই বলাইবাবুকে আর ধান চাষ নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়নি। ফলনের পরিমাণও বেড়েছিল ব্যাপক হারে। এরপর ১৯৬২ সাল থেকেই শুরু হয় মা লক্ষ্মীর পুজো।  বলাইবাবু বলেন, প্রথম বছর থেকেই এই পুজো ঘিরে গ্রামের মানুষের উৎসাহ ছিল ব্যাপক। পরবর্তীকালে গ্রামের ভিতরে মন্দির তৈরি হয়। সেখানে নিত্যদিন লক্ষ্মী ও নারায়ণের আরাধনা হয়ে থাকে। মা লক্ষ্মী খুবই জাগ্রত।  পাত্র পরিবারের সদস্য হেমন্তকুমার পাত্র বলেন, শব্দবাজির ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে পুজোয়। গ্রামের আট থেকে আশি সবাই পুজোয় অংশ নেন। মেলায় পসরা সাজিয়ে বসেছেন ডেবরার বাসিন্দা তপন কুমার সেন। তিনি বলেন, প্রতিবছর মেলায় প্রচুর বিক্রিবাটা হয়। এবছর বিক্রি ভালো হবে বলে আশাবাদী। 

     পাত্রবাড়ির মন্দির। নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)