পুজোয় ট্রাফিক বিধি ভাঙায় ১২ হাজার মামলা, ৪৪ শতাংশই বিনা হেলমেটের
বর্তমান | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গাপুজোয় পথ নিরাপত্তা আইন ভাঙার উৎসবেও মাতল মানুষ। কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, ‘চতুর্থী থেকে দশমী পর্যন্ত ট্রাফিকবিধি ভঙ্গের অভিযোগে ১২ হাজারেরও বেশি মামলা দায়ের হয়েছে। এবং প্রতিবছরের মতো এবারও পুলিশের চিন্তা বাড়িয়েছে হেলমেটহীনদের দৌরাত্ম্য। মামলার প্রায় ৪৪ শতাংশ কেসই হয়েছে ফাঁকা মাথার বাইক-স্কুটার সওয়ারদের বিরুদ্ধে।’ লালবাজারের দাবি, ‘হেলমেট পরার বিষয়ে বিশেষ সতর্ক ছিল বাহিনী। এই আইনে গতবারের তুলনায় কেসের হার বেড়েছে। তার জেরে পুজোয় বড় কোনও বাইক দুর্ঘটনা ঘটেনি।’
তৃতীয়া থেকেই কলকাতার রাজপথে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করেছিল লালবাজার। তা সত্ত্বেও চতুর্থী থেকে হেলমেট না পরে রাস্তায় নামা শুরু করেন বাইকচালক ও আরোহীরা। পুলিশের দাবি, ২০২৪ সালের তুলনায় এ বছর হেলমেটেহীনদের দাপট ছিল কম। তবে গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত এবছরও শিরস্ত্রাণ না পরা ছিল অব্যাহত। রাত একটা থেকে তিনটে পর্যন্ত শহরজুড়ে সারপ্রাইজড চেকিং চালানো হয়েছে। চতুর্থী থেকে দশমী পর্যন্ত সাতদিন শহরে বিনা হেলমেটের কারণে পাঁচ হাজার ৫১২ জনকে জরিমানা করেছে ট্রাফিক পুলিশ। ধরা পড়ার পর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযুক্তদের যুক্তি ছিল, ‘পুজোর সময় হেলমেট তো লাগে না।’ পুলিশের পাল্টা বক্তব্য, ‘পুজোর আগেই কলকাতা পুলিশ কমিশনার সামাজিক মাধ্যমে বার্তা দিয়েছিলেন পথবিধি মেনে ঠাকুর দেখতে বেরতে হবে।’ একইসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন পেজ থেকেই সচেতনতা বার্তা প্রচার করা হয়েছে। তাই শহরবাসীর সুরক্ষার স্বার্থে বিধি ভঙ্গকারীদের কঠোর হাতে দমন করা হয়েছে।
লালবাজারের কেস-খতিয়ান বলছে, পুজোর সময় প্রতিবারই মদ্যপদের দৌরাত্ম্য দেখা যায়। ২০২২ সালে অষ্টমীর রাতে পথ দুর্ঘটনায় দুই মদ্যপ বাইকচালকের মৃত্যু হয়েছিল। এবছরও ৮১৮ মদ্যপ দু’চাকা চালককে জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি মত্ত অবস্থায় গাড়ি ও বাইক চালানোর অভিযোগে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে কলকাতা পুলিশ। ট্রাফিক বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘যে জায়গা দিয়ে মদ্যপ অবস্থায় বাইকচালকরা পালানোর চেষ্টা করে থাকেন, এবার সেসব জায়গাতেই সারপ্রাইজড চেকিং হয়েছে। বড়সড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি।’
পুজোর সময় সাতদিনে ১২ হাজার ৩৯৩ মামলা করেছে ট্রাফিক বিভাগ। তার মধ্যে বাইকচালকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সবথেকে বেশি। ট্রিপল রাইডিং, হেলমেটহীন, বিপজ্জনক গতি, সবকটি অভিযোগই কড়া হাতে দমন করে পুলিশ। এদিকে রাস্তায় মদ্যপ অবস্থায় দুর্ব্যবহার ও অভব্যতার অভিযোগে সাতদিনে ৪৯৮ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। সব ডিভিশন মিলিয়ে ছ’লিটার মদ বাজেয়াপ্ত করেছে লালবাজার।