• তারকেশ্বর হাসপাতালে ওটির ছাদ থেকে চুঁইয়ে পড়ছে জল, রোগীদের নার্সিংহোমে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা
    বর্তমান | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, তারকেশ্বর: তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের ছাদ থেকে পড়ছে জল। হাসপাতালে বসেই সরাসরি নার্সিংহোমে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে চিকিৎসকদের একাংশ। জেনারেটর থাকলেও নেই পর্যাপ্ত তেলের সরবরাহ। এমন বেহাল দশা নিয়ে ক্ষুব্ধ রোগী ও স্থানীয় বাসিন্দারা।

    তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা পরিষেবা নেন ধনেখালি, পুড়শুড়া, হরিপাল ব্লক সহ হাওড়া ও বর্ধমান জেলার একাংশ বাসিন্দারা। প্রতিদিন গড়ে ৩০০-এর বেশি মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা নিতে আসে এই হাসপাতালে। এছাড়া শ্রাবণ ও চৈত্র মাসে জমায়েত হওয়া পুণ্যার্থীদের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাও এই হাসপাতাল।

    কিন্তু সেই হাসপাতালের ওটি রুমে চুঁইয়ে পড়ছে জল। এনিয়ে সমস্যায় চিকিৎসক থেকে রোগীরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সপ্তাহে ৩-৪ দিন প্রসূতি বিভাগের সার্জারি হয়। এদিকে, বৃষ্টি হলেই ছাদ থেকে চুঁইয়ে জল ওটি রুমের মধ্যে পড়ে। ফলে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সার্জারির দিন পরিবর্তন করতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা। ভারপ্রাপ্ত বিএমওএইচ শেখ হানিফ ওটি রুমে জল পড়া এবং জেনারেটরের সমস্যা নিয়ে বলেন, পুরো বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরকে জানানো হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাসও দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর।

    হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়েও মুখ খুলেছেন রোগীরা। তারকেশ্বর পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কের সেলাই করার প্রয়োজন হয়েছিল। কিন্তু সেই দায়িত্বটুকুও নেয়নি হাসপাতাল। দু’জনকে নার্সিংহোমে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মীকে বাড়িতে ডেকে এনে চিকিৎসা করান তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দা মধুসূদন খাঁ জানান, হাসপাতালে নিয়ে আমিও ভুক্তভোগী। চিকিৎসকরা হাসপাতালে বসে সরাসরি নার্সিংহোমে যাওয়ার পরামর্শ  দিচ্ছেন।

    এলাকাবাসীদের বক্তব্য, চিকিৎসকদের একটা অংশ একাধিক নার্সিংহোমের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত। এই ধরনের ব্যবস্থার ফলেই এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাগুলি ঘটছে। একই অভিযোগ তোলেন শিক্ষিকা অসীমা বেরা। তিনি বলেন, মহিলা জেনারেল ওয়ার্ডে আমি ভর্তি হয়েছিলাম। দু’টি শৌচালয়ের মধ্যে একটি ব্যবহার করা যায় না। অন্যটির পরিস্থিতি অত্যধিক খারাপ। তাছাড়া ২৪ ঘণ্টায় একবার মাত্র ডাক্তারবাবু আসছেন। তাই সম্পূর্ণ সুস্থ না হয়েও বাধ্য হয়ে ছুটি নিয়ে নিয়েছি।

    বিষয়টি নিয়ে জেলার জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ দেবীপ্রসাদ রক্ষিত জানান, পুরনো ছাদ খুব তাড়াতাড়ি মেরামত করা হব। পূর্তদপ্তরের তরফে পরিদর্শন করা হয়েছে। তাছাড়া স্বাস্থ্যদপ্তর থেকে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন জেনারেটরের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি সেটি স্থাপন করা হবে। আর হাসপাতাল থেকে নার্সিংহোমে পাঠানো বা চিকিৎসা পরিষেবা খারাপ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ আমাদের 

    কাছে আসেনি।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)