নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ইঁদুরের উৎপাতে দিশাহারা পরিস্থিতি! ফাইল কেটে দেওয়া তো আছেই। সেই সঙ্গে তারা কেটে ফেলছে বিদ্যুতের তার সহ অন্যান্য কেবল। এমনকি এসি মেশিনে ঢুকে যন্ত্রের ভিতরের তার ছিঁড়ে দিচ্ছে তারা। অগত্যা মূষিককূলের এই ধ্বংসযজ্ঞ ঠেকাতে কলকাতা পুরসভার কেন্দ্রীয় ভবনের এসি ঢেকে দেওয়া হচ্ছে লোহার খাঁচায়। বলা যেতে পারে, লোহার খাঁচায় বন্দি করা হচ্ছে এসি মেশিনকে! কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, বছরখানেক আগে পুরসভার কয়েকটি ঘরে ‘রোডেন্ট কন্ট্রোলার’ নামে একটি মেশিন বসানো হয়েছিল। তারপর ইঁদুরের উৎপাত কিছুটা কমেছিল। কিন্তু পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে এবার যে সমস্ত ঘরে ইঁদুরের উৎপাত বেশি, সেখানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রকে খাঁচাবন্দি করে ফেলা হচ্ছে।
পুরভবনে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, চিফ ম্যানেজারের (মার্কেট) ঘরের এসির চারপাশে এভাবেই খাঁচা লাগানো হয়েছে। পুর সচিবালয় বিভাগের ঘরেও একই চিত্র নজরে পড়বে। ইতিপূর্বে বহুবার পুরসভার সচিবালয়ে ইঁদুরের উৎপাতে ফাইল নষ্ট হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে পুরসভার একটি শ্মশানে ইঁদুর বৈদ্যুতিন চুল্লির তার কেটে দিয়েছিল। তখন শ্মশানে শবদাহ সাময়িকভাবে বন্ধ রেখে মেরামতি করতে হয়।
পুরসভায় মেয়রের অফস সহ তিনটি জায়গায় আলোক বিভাগের তরফে ‘রোডেন্ট কন্ট্রোলার’ মেশিন বসানো হয়েছে। সেখান থেকে নির্গত শব্দের কারণে ইঁদুর, টিকটিকি, ব্যাঙের মতো প্রাণীগুলি ঘরে ঢুকতে পারবে না। এই মেশিন বসানোর পর ফলাফলের ভিত্তিতে অন্যান্য ঘরেও তা বসানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল। পুরসভা সূত্রে খবর, ‘রোডেন্ট কন্ট্রোলার’-এর কার্যকারিতা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া এসেছে। আলোক বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘যেখানে খাবার পড়ে থাকবে, সেখানে ইঁদুর আসবেই। মেশিন বসানোর পর দেখা গিয়েছে, তাদের উৎপাত কিছুটা কমেছে। তবে পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। যেমন, প্রত্যেকের ভালো খাবারের প্রতি লোভ রয়েছে। কেউ কেউ লোভ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও অনেকেই পারে না। ইঁদুরের ক্ষেত্রেও এটা হয়। মেশিন থেকে নির্গত শব্দ উপেক্ষা করেই ইঁদুর খাবারের জন্য ছুটছে। এর মধ্যেই আচমকা দেখা যাচ্ছে, এসি চলছে না বা কম্পিউটার কাজ করছে না।
তখন জানা যাচ্ছে, তার কুটিকুটি করে দিয়েছে ইঁদুর। একাধিক এসি এভাবে খারাপ হয়েছে। তাই এগুলি লোহার খাঁচায় ঘিরে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন পড়লে সেই খাঁচা খুলে এসি মেরামত করা যাবে। ইঁদুর আর এসির ভিতরে ঢুকতে পারছে না।’