জয়পুরের সরকারি হাসপাতালে ভয়াবহ আগুন, মৃত আট, ধোঁয়া দেখে কর্মীদের বিরুদ্ধে পালানোর অভিযোগ...
আজকাল | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বীভৎস। রবিবার গভীর রাতে জয়পুরের সরকার পরিচালিত সাওয়াই মান সিং (এসএমএস) হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে আগুন লেগে আটজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ট্রমা সেন্টারের ইনচার্জ ডা. অনুরাগ ধাকাড জানিয়েছেন যে, স্টোরেজ এলাকায় আগুন লাগার সময় নিউরো আইসিইউতে ১১ জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
আগুন দেখেই হাসপাতাল জুড়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়, ধোঁয়া দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে, রোগী এবং তাঁদের পরিবারের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে বহাসপাতালের বিভিন্ন নথি, আইসিইউ সরঞ্জাম, রক্তের নমুনা টিউব এবং এলাকায় সংরক্ষিত অন্যান্য জিনিসপত্র পুড়ে গিয়েছে।
পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে দেখে হাসপাতালের কর্মীরা রোগীদের সরিয়ে নিয়ে যান, এমনকি তাদের বিছানা-সহ হাসপাতাল বিল্ডিংয়ের ভবনের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে দমকলকর্মীরা পৌঁছে প্রায় দুই ঘন্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ওয়ার্ড বয় বিকাশ পিটিআইকে জানিয়েছেন যে, আগুন আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করার আগেই তিনি এবং অন্যান্য কর্মীরা যতটা সম্ভব রোগীদের উদ্ধার করেছেন। তিনি বলেন,স "আমরা যখন আগুন লাগার কথা শুনতে পাই, তখন অপারেশন থিয়েটারের ভেতরে ছিলাম, তাই আমরা তাৎক্ষণিকভাবে সেন্টারের ভেতরে থাকা লোকজনকে উদ্ধার করতে ছুটে যাই। আমরা কমপক্ষে তিন থেকে চারজন রোগীকে বাঁচাতে পেরেছি। তবে, আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে আমরা আর হাসপাতাল ভবনের ভেতরে যেতে পারিনি। যতটা সম্ভব উদ্ধার করার জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি।" বিকাশ আরও বলেন যে, পুলিশ দুর্ঘটনার খবর পেয়ে এসেছিল, কিন্তু প্রচণ্ড ধোঁয়ার কারণে তারা সেই সময়ে হাসপাতাল ভবনে প্রবেশ করতে পারেনি।
দমকল বাহিনী পৌঁছালে পুরো ওয়ার্ড ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের আগুন নেভানোর জন্য ভবনের বিপরীত দিকের একটি জানালা ভেঙে ফেলতে হয়।
মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী যোগারাম প্যাটেল এবং স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জওহর সিং বেধাম পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে ট্রমা সেন্টার পরিদর্শন করেছেন।
দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রথমে পৌঁছালে, দুই রোগীর আয়া তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অভিযোগ করেন যে আগুন লাগার সময় কর্মীরা পালিয়ে গিয়েছিল। তারা আরও দাবি করেন যে, হাসপাতালের কর্মীরা তাদের রোগীদের অবস্থা সম্পর্কে আপডেট দিতে পারেননি। আয়াদের একজন বলেন, "আমরা ধোঁয়া দেখতে পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কর্মীদের খবর দিয়েছিলাম, কিন্তু তারা কোনও পাত্তা দেয়নি। আগুন লাগার পর তারাই প্রথমে ছুটে এসেছিল। এখন, আমরা আমাদের রোগীদের সম্পর্কে কোনও তথ্য পাচ্ছি না। আমরা তাদের অবস্থা জানতে চাই, কিন্তু কেউ আমাদের বলছে না।"
পরে, মুখ্যমন্ত্রীও ঘটনাস্থলে পৌঁছে চিকিৎসক ও রোগীদের সাথে কথা বলেন।