সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রবিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার জানিয়েছিলেন, ২২ নভেম্বরের মধ্যে বিহারে বিধানসভার নির্বাচনের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, সোমবারই বিকেল চারটে নাগাদ নির্বাচনের দিনক্ষণ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। দিল্লির বিজ্ঞান ভবন থেকে এই বিষয়ে ঘোষণা করা হবে কমিশনের তরফে।
দু’দিনের সফরে পাটনা এসেছেন নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। খতিয়ে দেখছেন নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্ব। শনিবার সেখানেই সাংবাদিক বৈঠক থেকে কমিশনার বলেন, “২২ নভেম্বরের মধ্যে যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে যাবে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে যা যা করণীয় সবটাই করা হবে।” একইসঙ্গে জানান, “কোনও বুথেই ১২০০ জনের বেশি ভোটার থাকবে না। ভোটের ১০০ শতাংশ ওয়েব কাস্টিং হবে। বিহারে ২৪৩টি বিধানসভা নির্বাচন। বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নির্বাচন সম্পন্ন হয়ে যাবে বিহারে।” উলেখ্য, বর্তমান বিহার বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২২ নভেম্বর। নিয়মমতো তার আগেই শেষ করতে হয় নির্বাচন প্রক্রিয়া। সেইমতো রাজ্যে পুরোদমে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে।
দু’দিনের এই সফরে নির্বাচন কমিশন সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠক সম্পন্ন করেছে। সমস্ত জেলার জেলাশাসক, পুলিশসুপার, ডিআইজি, আইজিদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। কমিশনার বলেন, এই প্রথমবার সমস্ত বুথ পর্যায়ের এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে করা হয়েছে। বুথ পর্যায়ের আধিকারিকদের থাকবে ফটো আইডি কার্ড। এছাড়া ভোটদাতাদের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের বাইরে নিজের ফোন জমা রেখে ভোট দিতে যেতে হবে।
এদিকে নির্বাচনী প্রস্তুতির সঙ্গেই চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হয়েছে। এই এসআইআর বা বিশেষ নিবিড় সংশোধনী নিয়ে কম উত্তেজনা হয়নি বিহারে। এই তালিকা থেকে অন্তত ৬৫ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। যদিও বিরোধীদের অভিযোগকে বিশেষ আমল না দিয়ে এদিন কমিশনার বলেন, এসআইআরে যাঁদের নাম বাদ পড়েছে তাঁদের কাছে আবেদন তাঁরা যদি যোগ্য ভোটার হন তাহলে মনোনয়নের সময়সীমার ১০ দিন আগে পর্যন্ত ফর্ম ৬ বা ফর্ম ৭ পূরণ করে জমা দিতে পারেন। জ্ঞানেশ কুমার বলেন, সম্প্রতি বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ হয়েছে। বুথস্তরের কর্মীরা শুধু নিজেদের বুথে নয়, বরং বিহারের ৯০,২১৭ জন বুথ-স্তরের কর্মী সারা দেশে প্রশংসনীয় কাজ করেছেন।
উল্লেখ্য, ২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় বর্তমানে শাসকের আসনে এনডিএ। তাদের শিবিরে বিজেপির পাশাপাশি রয়েছে জেডিইউ ও এলজেপি। মুখ্যমন্ত্রী পদে রয়েছেন নীতীশ কুমার। অন্যদিকে আরজেডি-এর নেতৃত্বে বিরোধী শিবিরে রয়েছে কংগ্রেস এবং বাম দলগুলি। এর বাইরে প্রশান্ত কিশোরের নেতৃত্বে জনসূরজ পার্টিও এবার সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা করেছে। ত্রিমুখি এই লড়াইয়ে বাকিদের টক্কর দিতে ইতিমধ্যেই খয়রাতির রাজনীতিতে নেমে পড়েছেন নীতীশ। একের পর এক ভাতা ঘোষণা করা হচ্ছে সরকারের তরফে। অন্যদিকে, বিজেপির বিরুদ্ধে হিন্দুত্ববাদের রাজনীতির পাশাপাশি ভোটচুরির অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দল।