• কোজাগরীতেই আশঙ্কার মেঘ কেটে দেখা দিল কাঞ্চনজঙ্ঘা, আতঙ্ক কাটিয়ে ছন্দে ফিরছে দার্জিলিং, কেমন আছে উত্তরবঙ্গ?...
    আজকাল | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: রবিবার মধ্যরাত থেকে ভোর। দমকা হাওয়া, প্রবল বর্ষণ। কলকাতার এক রাতের জলযন্ত্রণার আতঙ্ক আরও কয়েকগুন বাড়িয়ে তছনছ উত্তরবঙ্গ। প্রকৃতির রোষে বিধ্বস্থ পাহাড়। এই দুর্যোগ, এই পরিমাণ বৃষ্টি এর আগে পাহাড় কবে দেখেছেন মনে করতে পারছেন না স্থানীয়রা।

     হাওয়া অফিসের সতর্কতায় আশঙ্কা আরও বাড়ছিল। আবহাওয়া দপ্তর, রবিবার দিনভর উত্তরবঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছিল। পরিস্থিতি আরও কতটা খারাপ হবে, বা হতে পারে, তা নিয়েই আতঙ্ক ছিল। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে আটকে পড়া পর্যটকরা, একপ্রকার মুহূর্ত গুনেছেন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সোমেই উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে অরূপ বিশ্বাস এবং গৌতম দেবকে পাঠিয়েছেন ধুপগুড়ি। মুখ্যসচিব এবং তিনি যাচ্ছেন হাসিমারা। মমতা বলেন, 'আমি এবং সিএস যাচ্ছি হাসিমারা। হাসিমারা থেকে আমরা যাব নাগরাকাটা, যতদূর পর্যন্ত যাওয়া যায়।' মুখ্যমন্ত্রী হাসিমারা থেকে রাতে বাগডোগরা ফিরে, মঙ্গলবার ফের যাবেন মিরিকে। 

    তবে সোমবারে পাহাড় থেকে একপ্রকার সরে গিয়েছে আশঙ্কার মেঘ। যদিও এদিনও পাহাড়ের বিক্ষিপ্ত অংশে বৃষ্টি সতর্কতা জারি। তবে সোমবার সকাল থেকেই একপ্রকার রোদ ঝলমলে দার্জিলিং। সেখান থেকেই আশঙ্কার মেঘ সরে গিয়েছে দেখা মিলেছে কাঞ্চঞ্জঙ্ঘার। লণ্ডভণ্ড পাহাড়ের গায়ে যদিও এখনও দগদগে ঘায়ের মতোই স্পষ্ট ধস, দুর্যোগের ছাপ। যদিও রবিবার দিনভর বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হলেও, আর আশঙ্কা বাড়েনি। ডুয়ার্স-সহ উত্তরবঙ্গের একাধিক এলাকাতেও আর ভারী বৃষ্টি না হওয়ায়, জল নামতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায়, একে একে আটকে থাকা পর্যটকরা নামছেন পাহাড় থেকে। 

    বৃষ্টি কবে কমবে উত্তরবঙ্গে?উত্তরবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিতে ঝোড়ো হাওয়ার এবং বজ্রপাত-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বলে আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস। তবে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর, ২০২৫) থেকে বৃষ্টি কমতে পারে। মঙ্গলবার দুই দিনাজপুরে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। 

    উত্তরবঙ্গের নদীগুলির কী অবস্থা?উত্তরবঙ্গের নদীগুলি (তিস্তা, তোর্সা, মহানন্দা, জলঢাকা) বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। শিলিগুড়ি শহরে জল ঢুকছে।

    তবে রোদ ঝলমলে পরিস্থিতির মাঝে মাঝেই আসছে মেঘ। সোমবার মাঝে মাঝেই মেঘলা আকাশ দার্জিলিং-সহ শহর শিলিগুড়ির। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসে এখনও চিন্তায় প্রশাসনিক আধিকারিকরা। অপরদিকে শিলিগুড়ি থেকে মিরিক ঘুর পথেই যেতে হচ্ছে পর্যটক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষকে। 

    স্থানীয় সূত্রে তথ্য, দুধিয়া এলাকায় দুধিয়া ব্রিজের পাশেই থাকা বাড়ি ঘরে ফের একবার ফাটল ধরতে শুরু করেছে। যদিও প্রশাসনিক আধিকারিকরা আগেই এই এলাকা থেকে ত্রিশটি পরিবারকে কমিউনিটি সেন্টারে স্থানান্তর করেছেন বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, এদিন উত্তরবঙ্গে যাওয়ার আগে, মুখ্যমন্ত্রী জানান,  'কালকে যাঁরা বন্যায় মারা গিয়েছেন, ২৩ জন, তাঁদের প্রত্যেক পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে এবং প্রতি পরিবারের একজনকে স্পেশ্যাল হোমগার্ডের চাকরিও দেওয়া হবে, যাতে পরিবারগুলি নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে না হয়।' একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'যদিও আমি জানি, জীবনের বিকল্প কক্ষনও টাকা হয় না। কিন্তু যে চলে যায়, তাঁর পরিবার থেকে  যায়। পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ানোর জন্য এটা আমাদের সামাজিক কর্তব্য।' 
  • Link to this news (আজকাল)