ভারী বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গের অবস্থা শোচনীয়। ২০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জলমগ্ন উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। শনিবার নানা জায়গায় ধস নেমেছে। এখনও বন্ধ বহু রাস্তা। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন বিরোধীরা।
দুর্যোগে বিপর্যস্ত এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। পাশাপাশি কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সভাপতি শুভঙ্কর সরকার জানিয়েছেন, ‘উত্তরবঙ্গের বিধ্বংসী প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। বহু জীবনহানি এবং আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমরা উত্তরবঙ্গের সমস্ত জেলা কংগ্রেস কমিটির সভাপতিদের ইতিমধ্যে নির্দেশ পাঠিয়েছি যে, আমাদের সাধ্য অনুযায়ী দুর্গতদের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে হবে।’ দলের এক্স হ্যান্ডল থেকে পোস্ট করে তিনি প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, ‘প্রশাসনের কাছে আমাদের বক্তব্য, ত্রাণ বণ্টনের ক্ষেত্রে কোনও রকম দলবাজি যেন না হয়, সে বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। আমরা স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্বকেও বলছি, প্রশাসনের সঙ্গে সর্বক্ষণ যোগাযোগ স্থাপন করে চলুন।’ যদিও এই সময়ে ‘রাজনীতি’র ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি। শুভঙ্কর লিখেছেন, ‘এই দুর্যোগের সময় রাজনীতি করতে চাই না আমরা। কিন্তু যদি মানুষের প্রতি বঞ্চনা হয়, ত্রাণ নিয়ে দলবাজি হয় তবে আমরা রাজনৈতিক ভাবেই তার মোকাবিলা করব।’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘শনিবার সন্ধ্যা থেকে টানা বৃষ্টিতে দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের পাহাড় বিধ্বস্ত। একের পর এক ধস নেমে বহু রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে, তিস্তার জল উঠে এসেছে জাতীয় সড়ক পর্যন্ত। এখনও পর্যন্ত অন্তত ১৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বার্তা উল্লেখ করে শমীক লিখেছেন, ‘উত্তরবঙ্গের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং আশ্বাস দিয়েছেন-– কেন্দ্রীয় সরকার সর্বতোভাবে রাজ্যের মানুষের পাশে রয়েছে।’ মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে শমীকের বক্তব্য, ‘এই কঠিন সময়ে আমরা উত্তরবঙ্গবাসীর সঙ্গে একাত্ম। ভুটানে প্রবল বর্ষণের জেরে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার নিয়েছে। এই দুর্যোগ আমাদের সকলের, এই শোক আমাদের সবার। কিন্তু আমরা হার মানব না।’ পদ্মফুল শিবিরের কর্মীদের মানুষের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এক্স হ্যান্ডলে শমীক লিখেছেন, ‘দলের প্রতিটি কর্মী ও শুভানুধ্যায়ীর কাছে আহ্বান – মানুষের পাশে দাঁড়ান, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন।’
অন্যদিকে সিপিআইএম নেতা মহম্মদ সেলিম কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে একযোগে এই দুর্যোগ মোকাবিলা করার পরামর্শ দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গের বন্যায় মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন সেলিম। রেড ভলেন্টিয়াররা ত্রাণের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন বলে জানান তিনি। গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন সোমবার। তাঁর সঙ্গে উত্তরবঙ্গ সফরে যাচ্ছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এটি একটি দুর্যোগ। দুর্যোগে সবার পাশে থাকা উচিত।’