‘মা এবং স্ত্রী-র ‘ভরণপোষণ’ পুরুষের দায়িত্ব’, জানাল মাদ্রাজ হাই কোর্ট
প্রতিদিন | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্ত্রী ও মায়ের ভরণপোষণ পুরুষের আইনি ও নৈতিক দায়িত্ব। এক মামলার শুনানিতে এমনটাই জানাল মাদ্রাজ হাই কোর্ট। ওই উচ্চ আদালতের মাদুরাই বেঞ্চ মন্তব্য করেছে, “একজন পুরুষের জীবদ্দশায় তাঁর মা এবং স্ত্রীর যত্ন নেওয়া আইনি, নৈতিক এবং সামাজিক দায়িত্ব।”
সম্প্রতি ৬০ বছর বয়সি এক ব্যক্তি এবং তাঁর দুই ছেলের দায়ের করা একটি আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। যেখানে পারিবারিক আদালতের দেওয়া আদেশকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। ওই আদেশে বলা হয়েছিল যে, স্ত্রীকে মাসিক ২১ হাজার টাকা ভরণপোষণ দিতে হবে স্বামীকে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, “একজন মায়ের অমূল্য ভূমিকা এবং যত্নের ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায় না, তাঁর সন্তানরা জীবদ্দশায় তাঁকে যতই প্রতিদান দিক না কেন। তাছাড়া, জন্মের সময় একজন মা যে যন্ত্রণা এবং ত্যাগ সহ্য করেছেন, তা কোনওভাবেই বহন করা সম্ভব নয়।”
বিচারপতি শামীম আহমেদের দেওয়া রায় অনুসারে, এই দম্পতি ১৯৮৬ সালে বিয়ে করেছিলেন। এবং তাঁদের দুটি ছেলে রয়েছে। তবে, কিছু পারিবারিক বিরোধের কারণে, মহিলা ২০১৫ সালে তার স্বামীর বাড়ি ছেড়ে চলে যান। এরপর ২০১৯ সালে মাদুরাইয়ের পারিবারিক আদালতে মাসিক ৪০ হাজার টাকা ভরণপোষণের জন্য একটি মামলা দায়ের করেন। পারিবারিক আদালত এই বছরের মার্চ মাসে মহিলাকে মাসিক ২১ হাজার টাকা ভরণপোষণ দেওয়ার নির্দেশ দেয় স্বামী এবং দুই ছেলেকে। কিন্তু তিনজন এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দাবি করেন যে মহিলা নিজের ইচ্ছায় শ্বশুরবাড়ি ছেড়েছেন। এবং নিজের ভরণপোষণের জন্য তাঁর পর্যাপ্ত অর্থ রয়েছে।
স্বামী দাবি করেছেন যে তিনি স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছেন। তাঁর কোনও আয়ের উৎস নেই। ছেলেরা দাবি করেছেন যে তাঁরাও কম বেতনের চাকরি করছেন। এবং ভরণপোষণের খরচ দেওয়ার মতো সামর্থ্য তাঁদের নেই। উভয় পক্ষের শুনানি শোনার পর বিচারপতি আহমেদ বলেন, এটি একটি সুপ্রতিষ্ঠিত নীতি যে একজন পুরুষের তাঁর মা বা স্ত্রীর জীবদ্দশায় ভরণপোষণ করা আইনগত, সামাজিক এবং নৈতিক দায়িত্ব।
এই দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে, ব্যক্তিরা তাঁদের মায়েদের প্রতি শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা এবং করুণা প্রদর্শন করেন। যাঁরা তাঁদের পরিবারের লালন-পালন এবং যত্ন নেওয়ার জন্য নিজেদের নিবেদিত করেছেন। পারিবারিক আদালতের আদেশে কোনও অবৈধতা নেই। এবং বর্তমান জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনা করে নির্ধারিত পরিমাণও অতিরিক্ত বলে মনে হয় না। বিচারক তাই ওই আদেশে হস্তক্ষেপ করতে চান না বলে জানিয়ে আবেদনটি খারিজ করে দেন।