প্রাণ বাঁচাতে লোকালয়ে গন্ডার! অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান
প্রতিদিন | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: নতুন করে তেমন আর ভারী বৃষ্টি হয়নি। ধীরে ধীরে আবহাওয়ার উন্নতি হতেও শুরু করেছে। কিন্তু এখনও চারপাশ জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে প্রকৃতির ধ্বংসলীলার নমুনা। কোথাও জমে আছে জল, কোথাও বা ধস নেমে বিধ্বস্ত এলাকা। ভেঙেচুরে পড়ে রয়েছে রাস্তা। সবথেকে খারাপ পরিস্থিতি জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের। জলমগ্ন জলদাপাড়া অভয়ারণ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা। এই অবস্থায় সেখানকার জীবজন্তু কেমন আছে তা নিয়ে ইতিমধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে। এমনকী জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে গন্ডার ঘুরতে দেখা গিয়েছে। এই অবস্থায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হল জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান। বন্ধ হাতি এবং জঙ্গল সাফারি।
উৎসবের লম্বা ছুটিতে অনেকেই এই সময় পাহাড়ে বেড়াতে যান। একশৃঙ্গ গন্ডার, হাতি, বাইসন, হরিণ, লেপার্ড-সহ বহু পশুর বাস এই জঙ্গলে। শুধু তাই নয়, পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ থাকে জলদাপাড়ায় হাতির পিঠে চেপে জঙ্গল সাফারি করার। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি এবং পর্যটকদের সুরক্ষা কথা মাথায় রেখে তা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষের তরফে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এমনকী রাস্তাঘাট, সেতু এবং সংশ্লিষ্ট সমস্ত পরিকাঠামো সহ সমস্ত কিছু মূল্যায়ন করা হবে বলেও জানানো হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
বলে রাখা প্রয়োজন, ভুটান থেকে আসা জলস্রোতে একাধিক বন্যপ্রাণের মৃত্যু হয়েছে । জলে ডুবে গরুমারা জাতীয় উদ্যানের একটি গন্ডারের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার সকালেই গরুমারা জাতীয় উদ্যান লাগোয়া ময়নাগুড়ির রামসাই এলাকা থেকে গন্ডারের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। শিলিগুড়ির কাছেই মেচি নদীতে ডুবে একটি হস্তিশাবকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। জানা গিয়েছে ৩০ টি হাতির পাল এদিন মেচি নদী পার হতে যাওয়ার সময় দলছুট হয়ে যায় হস্তি শাবকটি । জলে ডুবে ওই হস্তি শাবকের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবারই জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও পারভীন কাশোয়ান জানিয়েছিলেন, “আমরা একটি গন্ডার নদীতে ভাসছে বলে একটি ভিডিও দেখেছি। পরে সেটি আবার ওপরে উঠেও যায়। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। জল কমলেই আমাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বোঝা যাবে।” এর মধ্যেই আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের পলাশবাড়িতে রাতভর একটি গন্ডারের তান্ডব চলে। স্থানীয়দের দাবি, বন্যার জল থেকে বাঁচতে লোকালয়ে চলে আসে গন্ডারটি। রবিবার নদীর জলে ভাসতে দেখা গিয়েছিল একটি গন্ডারকে।সেটাই এই গন্ডার কি না, তা খতিয়ে দেখছে বনদপ্তর।