সুমন করাতি, হুগলী: প্রকৃতির রুদ্ররোষ কয়েকঘণ্টায় তছনছ করে দিয়েছে উত্তরবঙ্গকে। লাগাতার বৃষ্টির সঙ্গে ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসা বৃষ্টির জলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত। পরিসংখ্যান বলছে, শনিবার ১২ ঘণ্টায় ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এরই মাঝে হুগলীর বৈদ্যবাটি থেকে উত্তরবঙ্গ বেড়াতে গিয়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আটকে দুটি পরিবারের ছয়জন পর্যটক।
আটকে রয়েছেন একই পরিবারের তিনজন সদস্য জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর স্ত্রী রেশমী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ছেলে রোহিত বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে আরেক পরিবারের তিনজন সদস্য স্নেহাশীষ নিয়োগী, তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতা নিয়োগী এবং তাঁদের মেয়ে।
অক্টোবরের এক তারিখ ব্যান্ডেল থেকে তিস্তা তোর্সা ট্রেনে ওঠে ওই দুই পরিবার। গত দুই অক্টোবর নিউ মাল স্টেশনে নামেন তাঁরা। সেখান থেকে তাঁরা পৌছান দাওয়াপানিতে। সেখানে দু’দিন থেকে গত পাঁচ তারিখ সন্ধ্যায় কাগেতে পৌঁছান তারা। সেখানে যাওয়ার সময় থেকেই দুর্যোগ শুরু হয়। রাত দশটার পর সেই দুর্যোগ ভয়ংকর রূপ নেয়। প্রচুর বৃষ্টি এবং বজ্রপাত হতে থাকে চারিদিকে। তাঁরা জানিয়েছেন, একসময় তাদের মনে হয় যেন পাহাড় ভেঙে পড়ছে। ঋষিখোলা নদীর জল ফুলে ফেঁপে ওঠে। ভয়ে রাতে একটা ঘরে সবাই মিলে রাত কাটান তাঁরা।
তাঁরা জানিয়েছেন, পরেরদিন সকালে উঠে তাঁরা দেখতে পান সর্বত্র জল জমে রয়েছে। যে নদীর জল একদম নীচে ছিল, সেই নদী ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। একদিন কাগে তে আটকে থাকার পর সোমবার অন্য রাস্তা ধরে বাড়ি ফেরার পথে রওনা হয়েছেন তাঁরা। তাঁরা জানিয়েছেন, গত ১৮ বছর ধরে উত্তরবঙ্গ যাচ্ছেন জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর পরিবার। পাহাড় তাদের খুবই প্রিয়। কিন্তু এবার সেখানে গিয়ে যে অভিজ্ঞতা হল তা ভুলতে পারবেন না বলেই জানিয়েছেন তাঁরা।