অর্ণব আইচ: বিসর্জনের শোভাযাত্রায় বিশৃঙ্খল আচরণ পুজো উদ্যোক্তাদের। পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেন পুলিশ আধিকারিকরা। আর তারই জেরে পুলিশের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল পুজো উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে। দুই মহিলা পুলিশকর্মীকে রাস্তার উপর ফেলে ব্যাপক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এক মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারের চুলের মুঠি ধরে তাঁকে রাস্তার উপর ফেলে দেয় কয়েকজন! বাধা দিয়ে গিয়ে ওই রোষের মুখে পড়েন পুলিশের এক কনস্টেবল। তাঁর মুখে প্রচণ্ড জোরে আঘাত করা হয়। তাঁর নিচের চোয়ালে এতটাই জোরে আঘাত লাগে যে একাধিক দাঁত খুলে বেরিয়ে আসে! দুই মহিলা-সহ মোট চারজন পুলিশকর্মী আহত। ঘটনাটি ঘটেছে গার্ডেনরিচের পাহাড়পুর রোডে। এই ব্যাপারে গার্ডেনরিচ থানায় বেশ কয়েকজন মহিলা-সহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, গুরুতর আঘাত, পুলিশের উপর হামলা, শ্লীলতাহানি, ষড়যন্ত্রের মামলা দায়ের করা হয়েছে। গার্ডেনরিচের পাহাড়পুর রোড ও মেটিয়াবুরুজে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম সাগর দাস, দীপ দাস, অমল গোষ, সঞ্জীবকুমার দাস, বিমল ঘোষ, স্বপন পাত্র ও গোপাল দাস। শনিবার রাত দশটা নাগাদ গার্ডেনরিচের পাহাড়পুর রোডের একটি পুজো কমিটি প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য শোভাযাত্রা বের করে। সেখানে ডিউটিতে থাকা পুলিশ আধিকারিকরা অভিযোগ তোলেন যে, অত্যন্ত ধীরগতিতে যাচ্ছে ওই শোভাযাত্রা। ফলে রাস্তায় যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। শুরু হতে থাকে ট্রাফিক যানজট। পুলিশকর্মীরা পুজো উদে্যাক্তাদের বলেন, শোভাযাত্রা তাড়াতাড়ি এগিয়ে নিয়ে যেতে। এই বিষয়টি নিয়েই পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে পুলিশের গোলমাল শুরু হয়। প্রথমে বচসা চলতে থাকে। পুলিশের অভিযোগ, তার পরই লাঠি, রড নিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায় কয়েকজন পুজো উদে্যাক্তা। ঠাকুরের কাঠামো থেকে বাঁশ খুলে নিয়েও চালানো হয় হামলা। পুলিশ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে তাঁদের উপর ইট ও পাথর নিয়ে আক্রমণ চালানো হয়। মহিলা পুজো উদে্যাক্তারাও পুলিশের উপর হামলা চালায়।
পুলিশের অভিযোগ, তাঁদের খুনের চেষ্টা করে অভিযুক্তরা। কয়েকজন এক মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারের চুল ধরে টেনে রাস্তায় ফেলে দেয়। ওই মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার ও এক মহিলা পুলিশকর্মীকে রাস্তার উপরই প্রচণ্ড মারধর এবং তাঁদের শ্লীলতাহানিও করা হয়। পুলিশ কনস্টেবল কর্ণশেখর ভৌমিক বাধা দিতে গেলে তাঁর মুখে প্রচণ্ড আঘাত করে নিচের চোয়ালের দাঁত ভেঙে দেওয়া হয়। আহতদের গার্ডেনরিচ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই কনস্টেবলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকিদের চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। চার মহিলা-সহ ১৪ জনের নামে ও বাকি অন্তত দশজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি ও মহিলার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে বাকি অভিযুক্তদের শনাক্তকরণের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।