দীর্ঘ নয় বছরের প্রতীক্ষা শেষে ফের আশার আলো দেখছেন চাকরিপ্রার্থীরা। বহু বিতর্ক, আদালতের রায় ও প্রশাসনিক ধাক্কা পেরিয়ে অবশেষে স্কুল সার্ভিস কমিশন নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার দিকে এগোচ্ছে। চলতি মাসের শেষ দিকেই প্রকাশিত হতে পারে বহু প্রতীক্ষিত পরীক্ষার ফলাফল। এমনই ইঙ্গিত মিলেছে এসএসসি সূত্রে।
২০১৬ সালের নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ কাঁপিয়ে দিয়েছিল রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাতিল হয় সেই নিয়োগ প্যানেল। চাকরি হারান প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। এরপর আদালতের তত্ত্বাবধানে ফের শুরু হয় পরীক্ষা। গত মাসে অনুষ্ঠিত হয় পুনরায় পরীক্ষা। এবারের পরীক্ষায় বসেছিলেন লাখ লাখ চাকরিপ্রার্থী। শুধু ২০১৬ সালের প্রার্থীই নয়, নতুন প্রার্থীও সুযোগ পেয়েছেন। বয়সের ক্ষেত্রে ব্যাপক ছাড় থাকায় আবেদন সংখ্যা ছিল রেকর্ড। এসএসসি-র এক আধিকারিকের কথায়, যত দ্রুত সম্ভব ফল প্রকাশের প্রস্তুতি চলছে। সব কিছু ঠিক থাকলে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহেই ফল ঘোষণা করা হবে। ফল প্রকাশের পর নভেম্বর মাসেই শুরু হবে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগ সম্পূর্ণ করা হবে। কারণ, শীর্ষ আদালতের নির্দিষ্ট নির্দেশ অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই গোটা প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।
এসএসসি সূত্রে জানা যাচ্ছে, এবার গোটা প্রক্রিয়াই রাখা হচ্ছে পুরোপুরি স্বচ্ছ ও ডিজিটালাইজড। প্রশ্নপত্র এবং উত্তরপত্রের কার্বন কপি সরাসরি পরীক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এমনকি পরীক্ষার পর প্রশ্ন ও উত্তরও ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে, যাতে কেউ কোনও ধরনের অনিয়মের অভিযোগ তুলতে না পারে।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছেন, বাংলায় প্রথমবার এমনভাবে স্বচ্ছ পরীক্ষা নেওয়া হল, যেখানে পরীক্ষার্থীর সামনে ফলাফল স্পষ্ট। অন্য কোনও রাজ্যে এমন নজির নেই। তবে আশঙ্কা এখন ইন্টারভিউ পর্বকে ঘিরে। অনেক প্রার্থীই বলছেন, আগের ঘটনার পর এখনও পুরোপুরি আস্থা ফিরে আসেনি। তাঁরা চান ইন্টারভিউ প্রক্রিয়াও হোক জনসমক্ষে স্বচ্ছভাবে। শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য এই আশঙ্কাকে হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, সরকার চাই, যাঁরা যোগ্য, তাঁরা যেন তাঁদের ন্যায্য চাকরি ফিরে পান।