‘ত্রাণশিবিরে চলে আসুন’, দুর্যোগস্থল পরিদর্শন করে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৭ অক্টোবর ২০২৫
রোদ উঠলেও উত্তরবঙ্গ এখনও স্বাভাবিক নেই। ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসা বন্যাজলে একাধিক এলাকা প্লাবিত, সেতু ভেঙে যোগাযোগ বিঘ্নিত। সোমবার সকালেই মেঘের আড়াল সরিয়ে উঁকি দিয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা, কিন্তু প্রকৃতির এই সৌন্দর্যের মাঝেও বাসিন্দাদের দুঃখ-দুর্দশা কাটিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে সোমবার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত উত্তরবঙ্গে পৌঁছান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সঙ্গে ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ও ডিজিপি রাজীব কুমার।
মুখ্যমন্ত্রী আলিপুরদুয়ারের হাসিমারা সেনা ছাউনিতে নামার পর সরাসরি গাড়ি করে নাগরাকাটায় যান। বিকেলের দিকে নাগরাকাটার কালীখোলা এলাকায় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে সতর্কবার্তা দেন, ‘আগামী দু-একদিনে ফের জোয়ার আসতে পারে। তাই এই সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যারা ইতিমধ্যেই ত্রাণশিবিরে এসেছেন, সেগুলো ভালো হয়েছে। যারা এখনও নিজের বাড়ি আঁকড়ে রয়েছেন, দয়া করে দ্রুত নিরাপদ স্থানে চলে আসুন। খাওয়াদাওয়া নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই।’
পরিদর্শনের সময় ভাঙা রাস্তার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি জানান, ‘রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই মেরামতের দায়িত্ব নিচ্ছে। যাদের বাড়ি ভেঙে গেছে, সেসব বাড়ি পুনর্নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে।’
দুর্যোগের ধাক্কায় বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিরিক ও তার আশেপাশের এলাকা। শিলিগুড়ি থেকে সরাসরি মিরিক যাওয়ার সড়ক যোগাযোগ এখন প্রায় বিচ্ছিন্ন। সুখিয়া, ঘুম বা কার্শিয়াংয়ের পথে ঘুরপথে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের। এই পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে মঙ্গলবারই মিরিকে পৌঁছবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, আগামী দু’দিন তিনি উত্তরবঙ্গে থাকবেন।
উল্লেখ্য, দুর্যোগের ফলে এপর্যন্ত ২৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। তার মধ্যে দার্জিলিংয়েই প্রাণ হারিয়েছেন ১৮ জন। মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি পরিবারের এক সদস্যকে হোমগার্ডের চাকরির আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।
এদিকে প্রশাসনিক দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ত্রাণশিবিরে সারা দিন ধরে খাবার, পানি ও প্রাথমিক চিকিৎসাব্যবস্থা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনা মোতায়েনের পাশাপাশি উদ্ধার ও পুনর্বাসন কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।