• উত্তরবঙ্গে চা শিল্পে ১০০ কোটির ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৭ অক্টোবর ২০২৫
  • উত্তরবঙ্গজুড়ে লাগাতার বর্ষণ ও হড়পা বানের জেরে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী চা শিল্প। পাহাড় থেকে তরাই, সমগ্র অঞ্চলেই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু চা বাগান। বহু বাগান প্লাবিত, ভেসে গিয়েছে চা গাছ, জল ঢুকে পড়েছে কারখানার ভেতরেও। এর ফলে বিপুল পরিমাণ তৈরি চা পাতা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিকভাবে ৭৫ কোটি টাকা হলেও তা ১০০ কোটির গণ্ডি ছাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের।

    চা শিল্পের সঙ্গে যুক্তদের মতে, এই পরিস্থিতি ১৯৬৮ সালের ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর অন্যতম ভয়াল বিপর্যয়। ডুয়ার্স ব্রাঞ্চ টি অ্যাসোসিয়েশনের এক সদস্য জানিয়েছেন, ‘চা শিল্প কার্যত ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে। বহু বাগানে রাস্তা, কালভার্ট, শ্রমিকদের ঘরবাড়ি ধসে গিয়েছে, কারখানায় ঢুকে পড়া জলে নষ্ট হয়েছে কোটি কোটি টাকার চা।’

    বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ডুয়ার্সের চ্যাংমারি চা বাগান, যেখানে সিটিসি ও গ্রিন টি মিলিয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকার চা নষ্ট হয়েছে। একইসঙ্গে গুডহোপ, আনন্দপুর, বানারহাট, নাগরাকাটা সহ অন্তত ৫০টি চা বাগান ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। পাহাড়ে ভূমিধসে অন্তত ১০টি চা বাগান পুরোপুরি ভেসে গিয়েছে। তরাই অঞ্চলেও কমপক্ষে ১৫টি বাগানে চাষাবাদ ও উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

    আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি ব্লকের সাতালি, বীচ, কালচিনি চা বাগান এখন সম্পূর্ণ জলের তলায়। এসব অঞ্চলে শ্রমিকদের বসবাসের ঘরবাড়িও ধ্বংসপ্রাপ্ত। চা বণিকসভা মনে করছে, রাজ্য সরকারের সক্রিয় সহযোগিতা ছাড়া এই বিপর্যয় থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। এই বিপর্যয়ের প্রভাব বাজারেও পড়তে শুরু করেছে। উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় আগামী কয়েক মাসে চা-র দাম বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)