সবরীমালা মন্দিরে সোনার প্রলেপ ঘিরে তীব্র বিতর্ক, সরগরম কেরল বিধানসভা, বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করল হাইকোর্ট
বর্তমান | ০৭ অক্টোবর ২০২৫
তিরুবনন্তপুরম: বিধানসভা ভোটের মাত্র কয়েক মাস আগেই কেরলে বাম সরকারের বিরুদ্ধে বড় অস্ত্র হাতে পেল বিরোধীরা। কেরল রাজনীতিতে বরাবরই আলাদা গুরুত্ব পেয়ে এসেছে সবরীমালা মন্দির। সেই মন্দিরের দ্বারপালকের পবিত্র সোনার প্রলেপ খোয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার দায় স্বীকার করে রাজ্যের দেবস্বম মন্ত্রী ভি এন বাসবনের পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার বিরোধীরা। অন্যদিকে, সরকার পক্ষও অনড়। এই অবস্থায় সোমবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল কেরল বিধানসভা। বাধ্য হয়ে প্রশ্নোত্তর পর্ব এবং অধিবেশন সাময়িকভাবে মুলতুবি ঘোষণা করে দেন স্পিকার এ এন শামসের।
এদিন প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু হতেই বিরোধী দলনেতা ভি ডি সতীশন সোনার পাত চুরি যাওয়ার বিষয়টি উত্থাপন করেন। রাজ্যের মন্ত্রী ভি এন বাসবনের পাশাপাশি ত্রিবাঙ্কুর দেবস্বম বোর্ডের প্রেসিডেন্ট পি এস প্রশান্তর পদত্যাগের দাবি করেন। এই বোর্ডের হাতেই রয়েছে সবরীমালা মন্দিরের দেখভালের দায়িত্ব। তবে বিরোধী দলনেতার দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে বিধানসভার স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন স্পিকার। এরপরই বিরোধীরা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁদের হাতে ছিল ‘আয়াপ্পানের সোনা চুরি, মন্দির অপবিত্র করেছে লুটেরার দল’ লেখা প্ল্যাকার্ড। বিক্ষোভ চলাকালীন পোডিয়ামে থাকা স্পিকারকে রক্ষা করতে নেমে আসেন মন্ত্রী এবং শাসক দলের বিধায়করা। ফলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
বিরোধীদের এই আচরণের সমালোচনা করেছেন অর্থমন্ত্রী কে এন বালগোপাল। তাঁর কথায়, ‘প্রশ্নোত্তর পর্বে বাধা দিয়ে বিরোধীরা নজিরবিহীন কাজ করেছেন। এই আচরণ মানা যায় না।’ অন্যদিকে, অধ্যক্ষ শামসের বলেন, বিরোধীদের এই আচরণ মানুষের প্রতি অশ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ। তিনি বিরোধীদের প্ল্যাকার্ড নামিয়ে রাখতে বলেন। তবে তাঁর সেই আর্জি মানেননি বিরোধীরা। এরপরেই প্রশ্নোত্তর পর্ব বাতিলের কথা ঘোষণা করেন অধ্যক্ষ। পরে তিনি অধিবেশন কিছুক্ষণের জন্য মুলতুবি করে দেন। তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সবরীমালা ইস্যুকে ব্যবহার করে যেভাবে বিরোধীরা বিধানসভায় বিক্ষোভ দেখালেন, তার জল গড়াবে বহুদূর।
এদিকে, সবরীমালার দ্বারপালকের ওজন কমে যাওয়ার অভিযোগের তদন্তে সোমবার বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠনের কথা ঘোষণা করল কেরল হাইকোর্ট। বিচারপতি রাজা বিজয়রাঘবন ভি এবং বিচারপতি কে ভি জয়কুমরাকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ জানিয়েছে, সিটের নেতৃত্বে থাকবেন পুলিশ সুপার এস শ্রীধরণ। এর আগে হাইকোর্টের নির্দেশে ত্রিবাঙ্কুর দেবস্থানম বোর্ড ভিজিলেন্স টিম প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দেয়। এবার বিষয়টি নিয়ে সিট গঠন করল কেরল হাইকোর্ট।