নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্টে বিহারের স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন (এসআইআর) ইস্যুতে আজই চূড়ান্ত শুনানি। এসআইআরে যদি কোনও অনিয়ম কিছু মেলে, তাহলে পুরো প্রক্রিয়া বাতিল করা হবে—এই হুঁশিয়ারি ইতিমধ্যেই দিয়ে রেখেছে শীর্ষ আদালত। সেই ‘ঝুঁকি’ মাথায় নিয়েই সোমবার বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দিলেন দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। ভোট হবে এসআইআর হওয়া ভোটার তালিকা মেনেই। এমনকি বিজেপির ‘দাবি’কে মান্যতা দিয়ে বিহারে দু’দফাতেই হবে বিধানসভা নির্বাচন। আগামী ৬ এবং ১১ নভেম্বর। প্রথম দফার মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষদিন ১৭ অক্টোবর। দ্বিতীয় দফার ২০ অক্টোবর। ফলপ্রকাশ ১৪ নভেম্বর। ঘটনাচক্রে সেদিন আবার পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর জন্মদিন।
২০২০ সালে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল তিন দফায়। গত শনিবার পাটনায় সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল কমিশনের ফুল বেঞ্চ। সেখানেই বিজেপি দাবি করে, এবার দু’দফায় হোক ভোট। শরিক নীতীশ কুমারের দল জেডিইউয়ের প্রস্তাব ছিল এক দফার। এদিন অবশ্য বিজেপির ‘দাবি’ই মেনে নেওয়া হয়েছে। নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে দুই কমিশনার সুখবীর সিং সান্ধু এবং বিবেক যোশিকে পাশে রেখে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার বলেন, ‘ভোট করানোর ক্ষেত্রে কমিশন এখন অনেক বেশি পারদর্শী। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী পাওয়ার বিষয় মাথায় রেখেই দফা কমানো হচ্ছে। দু’দফায় ভোট হবে। ভোটাররাও আগের চেয়ে সচেতন। কম দফায় ভোট সহজও হবে।’
সাম্প্রতিক সময়ে কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে সরব কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে তামাম বিরোধী দল। বিজেপির দাবি মেনেই দু’দফায় ভোট ঘোষণায় সেই অভিযোগ কি আরও জোরদার হবে না? এই প্রশ্নের জবাবে এদিন জ্ঞানেশ কুমার বলেন, ‘গণতন্ত্রে এসব হয়েই থাকে। এব্যাপারে কোনও মন্তব্য করব না।’ বিহার নির্বাচনের কাজে যুক্ত থাকবেন মোট সাড়ে আট লক্ষ মানুষ। তার মধ্যে আড়াই লক্ষ পুলিশ কর্মী। পাশাপাশি ৪ লক্ষ ৫৩ হাজার ভোটকর্মী, ৮৯ হাজার ৭১২ অঙ্গনওয়াড়ি সেবিকা থাকবেন। বিজেপির দাবি ছিল, ভোটকেন্দ্রে আসা বোরখা পরা মহিলাদের পরিচয় যাচাই করতে হবে। প্রয়োজন পড়লে অঙ্গনওয়াড়ি সেবিকারা সেকাজ করবেন বলে কমিশনের সিদ্ধান্ত। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার আরও জানিয়েছেন, মোট ৯০ হাজার ৭১২ টি বুথে ভোটগ্রহণ হবে। মোট ভোটার ৭ কোটি ৪৩ লক্ষ। এরপরেও অবশ্য যোগ্য ভোটাররা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষের ১০ দিন আগে পর্যন্ত তা করা যাবে বলেই জানিয়ে দিয়েছেন জ্ঞানেশ কুমার। এও স্পষ্ট করেছেন, গোটা দেশেই এসআইআর হবে। কিন্তু এসআইআরের অন্যতম যে উদ্দেশ্য বাংলাদেশি তথা বিদেশি নাগরিকদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া, তার কী হল? কত বিদেশি পাওয়া গেল এসআইআরে? বারবার প্রশ্ন করলেও জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন জ্ঞানেশ কুমার।