নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: রেড রোডের দুর্গা কার্নিভাল ঘিরে এ বছরও উচ্ছ্বাস ছিল তুঙ্গে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে কলকাতায় অনুষ্ঠিত এই উৎসব সরাসরি দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল জেলার সমস্ত পুরসভাকে। জেলার শহরগুলিতে জায়ান্ট স্ক্রিনে লাইভ সম্প্রচারের প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল পুরসভাগুলির তরফে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ঘটে যায় বিপত্তি। কার্নিভাল শুরুর প্রায় ঘণ্টাখানেক বাদে লিঙ্ক পাঠানো হয় পুরসভাগুলিকে।
বিকেল চারটেয় রেড রোডে কার্নিভাল শুরু হলেও জেলার পুরসভাগুলির কাছে ইউটিউব লিঙ্ক পৌঁছতে পৌঁছতে হয়ে গিয়েছে বিকেল পাঁচটা কিংবা তারও বেশি। দেরিতে লিংক পৌঁছনোয় বিপাকে পড়ে একাধিক পুরসভা। তার উপর রবিবারেই নদীয়া জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় তীব্র দুর্যোগের কারণে স্বাভাবিক কাজকর্মও বন্ধ ছিল। সেইসঙ্গে ছুটির দিন হওয়ায় পুরসভার কর্মী থেকে জায়ান্ট স্ক্রিনগুলির দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলির অধিকাংশ কর্মী ছুটিতে। ফলে জায়ান্ট স্ক্রিনে কার্নিভাল সরাসরি সম্প্রচার করতে হিমশিম খেতে হয় নদীয়ার দু’টি গুরুত্বপূর্ণ পুরসভা, রানাঘাট ও শান্তিপুরকে। রানাঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান কোশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিকেল পাঁচটার পরে আমরা লিঙ্ক পেয়েছি। এটা সত্যিই সমস্যা তৈরি করেছিল। আমাদের স্ক্রিন পরিচালনার এজেন্সি কল্যাণীতে। তাদের কর্মীদের হঠাৎ ডেকে আনতে হয়েছিল। ফলে সন্ধ্যা প্রায় ৬টা ৪০ নাগাদ লাইভ সম্প্রচার শুরু করা সম্ভব হয়। তখন কার্যত কার্নিভাল শেষ পর্যায়ে। একই অভিযোগ শান্তিপুর পুরসভারও। সেখানে বিকেল পাঁচটার পরে লিঙ্ক পৌঁছয় বলে জানান পুরসভার চেয়ারম্যান সুব্রত ঘোষ। তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত আমরা লাইভ দেখাতে পেরেছি, কিন্তু লিঙ্ক দেরিতে আসায় কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়েছে, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।
ফলে দুই শহরেই কার্নিভালের শেষ দিকের অংশটুকুই সম্প্রচার করা সম্ভব হয়েছে। সমস্যায় পড়েছে অন্যান্য শহরগুলিও। প্রশ্ন উঠছে—যদি পুরসভাগুলিতে সরাসরি কার্নিভাল দেখানোর পরিকল্পনা আগেই থাকে, তবে কেন আগে থেকেই লিঙ্ক পাঠানো হল না। আগে থেকে জানানো হলে পুরসভাগুলি যথাযথভাবে প্রস্তুতি নিতে পারত এবং বিশৃঙ্খলা এড়ানো যেত।
তবে জেলার তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর দেরির অভিযোগ অস্বীকার করেছে। জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক (ডিআইসিও) শুভময় মিত্র জানান, যে দাবি করা হচ্ছে তা সত্য নয়। আমরা ঠিক সময়েই লিঙ্ক পাঠিয়েছিলাম। এর বেশি কিছু বলার নেই। যদিও মানুষের অভিজ্ঞতা তা নয়। শেষ মুহূর্তে লিঙ্ক পৌঁছনোয় একদিকে যেমন পুর কর্তৃপক্ষগুলি অস্বস্তিতে পড়েছে, তেমনই আশাহত হতে হয়েছে দর্শকদের। -নিজস্ব চিত্র