দুর্যোগের জেরে দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন রানাঘাট শহরের একাংশে, ক্ষোভ, ফুটপাতে দোকান থাকায় ট্রান্সফর্মার বদলাতে ১১ ঘণ্টা
বর্তমান | ০৭ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: রবিবার দুপুরের বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি কয়েক ঘণ্টার জন্য অচল করে দিল রানাঘাট শহরের একাংশ। এদিন দুপুর ২টো নাগাদ প্রবল বর্ষণ শুরু হতেই ওল্ড বহরমপুর রোডের ধারে থাকা একটি ট্রান্সফর্মার বিকল হয়ে যায়। তার জেরে শহরের কলেজপাড়া এবং শ্যামাপ্রসাদ পল্লির মতো বিস্তীর্ণ জনবহুল এলাকাগুলিতে বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এলাকাগুলি প্রায় ১১ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকে। তার জেরে সাধারণ মানুষকে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হতে হয়। গভীর রাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
সূত্রের খবর, বিকল ট্রান্সফর্মার মেরামতির কাজ শুরু হলেও তা দ্রুত এগয়নি। প্রায় ১১ ঘণ্টা পর, গভীর রাতে এলাকায় ফের আলো জ্বলে। ততক্ষণে অবশ্য ক্ষোভে ফুঁসতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, বিকেল থেকে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হলেও কারও তরফে সাড়া মেলেনি। দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ না থাকায় স্বাভাবিক জনজীবন থমকে যায়। লক্ষ্মীপুজোর জমজমাট বাজার থাকা সত্ত্বেও বিদ্যুৎ না থাকায় দোকানপাট বন্ধ রাখতে হয়। গরমের জেরে সমস্যায় পড়ে শিশু ও বয়স্করা। এমনকী, ছাত্রছাত্রীদের অনলাইন ক্লাসও ব্যাহত হয়। বিদ্যুৎ দপ্তরের এক কর্তা বলেন, ওই এলাকায় একটি ট্রান্সফর্মার রয়েছে। বজ্রপাত এবং দুর্যোগের কারণে সেটি সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছিল। ফলে সেটি সরিয়ে একটি নতুন ট্রান্সফর্মার বসাতে সময় লেগে যায়। তার উপর, যেখানে ট্রান্সফর্মারটি ছিল, সেখানে ফুটপাতের উপরে দোকানপাট গজিয়ে উঠেছে। তাই যন্ত্রপাতি নিয়ে মেরামতির কাজ করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। তাঁর দাবি, রাত ১২টার পর নতুন যন্ত্রপাতি এনে বিকল ট্রান্সফর্মারটি বদল করা হয়। প্রায় রাত ১টা নাগাদ পুনরায় বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করা সম্ভব হয়।
যদিও এই ঘটনার পর দায় নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। বিদ্যুৎ দপ্তরের অভিযোগ, পুরসভার অনুমতি ও সহযোগিতা না থাকায় কাজে দেরি হয়। অপরদিকে রানাঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান কোশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমরা কেন অসহযোগিতা করতে যাব? বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। অতীতে যেকোনও সমস্যার ক্ষেত্রে আমরা সহায়তা করেছি। এবারও জানালে করতাম। পুরসভা কি চাইবে শহরের একটা বিস্তীর্ণ অংশ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকুক? ওঁদের দাবি সম্পূর্ণ অমূলক।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এদিন শহরের এমন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় একটি ট্রান্সফর্মার বিকল হয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকল। তাহলে বড় ধরনের দুর্যোগে পরিস্থিতি কতটা বিপজ্জনক হতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। নাগরিকদের দাবি, অবিলম্বে ট্রান্সফর্মারগুলির অবস্থান ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পুনর্বিবেচনা করা উচিত। যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের বিঘ্ন আর না ঘটে। -নিজস্ব চিত্র