• কেশপুরের শীর্ষায় তৈরি শোলার চাঁদমালা পাড়ি দিচ্ছে ভিনরাজ্যে
    বর্তমান | ০৭ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কেশপুর: ১০০ বছর ধরে দেবীপ্রতিমার জন্য শোলার চাঁদমালা তৈরি হচ্ছে কেশপুর ব্লকের শীর্ষা পঞ্চায়েতের মালাকারপাড়ায়। ভিনরাজ্যেও সেই চাঁদমালার চাহিদা বাড়ছে। খুচরো ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা গ্রামে এসে চাঁদমালা কিনে নিয়ে যান। কিন্তু বৃষ্টি মালাকারপাড়ার শিল্পীদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেইসঙ্গে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাঁরা সমস্যায় পড়েছেন।

    এদিন মালাকারপাড়ার একটি দোকানের সামনে বসে চাঁদমালা তৈরি করছিলেন ভানুমতী হালদার। ৮০বছর বয়সি ওই বৃদ্ধা বলেন, আমি বংশপরম্পরায় এই কাজ করে আসছি। গ্রামের অনেকেই চাঁদমালা তৈরির সঙ্গে যুক্ত। এবছর চাহিদা ভালোই আছে। জগদ্ধাত্রী ও কালীপুজোয় চাঁদমালা ব্যবহার হবে। কিন্তু বৃষ্টির জেরে আমরা সমস্যায় পড়েছি। কাজের গতি অনেকটা কমে গিয়েছে। বৃষ্টি হলে কাজ বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

    বাম আমলে কেশপুরজুড়ে রাজনৈতিক হানাহানি লেগেই থাকত। এর ফলে ক্ষুদ্র শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষকে নানা সমস্যায় পড়তে হতো। তবে গত কয়েকবছরে ছবিটা বদলেছে। গ্রামের মানুষ নানা প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। ফলে ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশ হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা বাপি পিড়ি, আসগর আলি বলেন, আগে রাজনৈতিক হানাহানিতে অনেকেই ঘরছাড়া থাকতেন। এখন পরিবেশটা বদলেছে। এখানে তৈরি চাঁদমালা ভিনরাজ্যেও যায়।

    গ্রামবাসীরা জানান, পাইকারি বাজারে দু’টাকা থেকে শুরু করে ৫০০, একহাজার টাকা দামের বড় চাঁদমালাও বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ২০-৫০টি বড় চাঁদমালা তৈরি করা হয়। ভিনরাজ্যে এই চাঁদমালার চাহিদা বাড়ছে। তবে যে শোলা আগে ৩০টাকা করে কেনা হতো, তার দাম এখন দাঁড়িয়েছে ৫০-৬০টাকায়। এছাড়া, যন্ত্রের মাধ্যমে তৈরি গয়না বাজারে চলে আসায় শিল্পীদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। এখন শোলার গয়না তৈরির জন্য ভালোমানের কারিগর পাওয়াও মুশকিল। খুব খাটুনির এই কাজের সঙ্গে অনেকেই যুক্ত হতে চাইছেন না।
  • Link to this news (বর্তমান)