• ফুঁসছে বহু নদী, ফের বৃষ্টি হলে বন্যার আশঙ্কা দুই মেদিনীপুরে, সেচমন্ত্রীর নির্দেশে বাঁধে নজরদারি রাতদিন
    বর্তমান | ০৭ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: টানা বৃষ্টিতে মাথায় হাত পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের। প্রায় এক হাজার মাটির বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। নদীর জল বিপদসীমা স্পর্শ করায় ফের বন্যা পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রশাসনের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, ইতিমধ্যেই বন্যাপ্রবণ বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রাতেও বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করা হচ্ছে। আরও বেশি পরিমাণে ত্রিপল ও ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, জেলার একাধিক নদীতে জল বাড়ছে। বৃষ্টি বাড়লে ফের বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে দুই মেদিনীপুরেই। এর ফলে ব্যাপক পরিমাণ ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। 

    সোমবার কেলেঘাই নদীতে জলস্তর আরও কিছুটা বেড়েছে। সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার নির্দেশে রাতদিন নদীপাড়ে নজরদারি শুরু করেছে দপ্তর। পটাশপুর-১ ব্লকের আমগাছিয়ায় চারটি ঠিকাদার সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়েছে। নদীবাঁধ শক্তপোক্ত করা এবং নিচু জায়গায় মাটির বস্তা রেখে উঁচু করার কাজ করছে ওইসব এজেন্সি। নদীপাড়ের প্রতিটি ব্লক প্রশাসনকে অ্যালার্ট করা হয়েছে। আমগাছিয়ায় সেচদপ্তরের পক্ষ থেকে ক্যাম্প অফিস বানিয়ে পরিস্থিতির উপর নজরদারি রাখা হচ্ছে। কেলেঘাই নদীতে জল বাড়তে থাকায় পটাশপুর-১ ও ভগবানপুর-১ ব্লকের নদীপাড়ের বাসিন্দারা উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। রাতে সেচদপ্তর নদীবাঁধ বরাবর নাইট পেট্রলিং করছে। জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, প্রশাসন সজাগ রয়েছে। কেউ আতঙ্কিত হবেন না। পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ মজুত রয়েছে।

    মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মন্ত্রী মানসবাবু জেলার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যাচ্ছেন। এদিন মানসবাবু বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করে খোঁজখবর নিয়েছেন। ঘাটালে গিয়েও বৈঠক করেছি। বিপুল পরিমাণে জল ছাড়া হচ্ছে। এর ফলে সমস্যা বাড়ছে। কিন্তু একজন মানুষও যাতে সমস্যায় না পড়েন সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।

    প্রসঙ্গত, এবছর ১৮জুন থেকেই লাগাতার বৃষ্টি শুরু হয়। এতেই সমস্যায় পড়েন গড়বেতা-১ ও গড়বেতা-২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। সেই এলাকা থেকে জল তাড়াতাড়ি নেমে গেলেও ঘাটাল মহকুমার একাধিক এলাকা জলমগ্ন হয়ে যায়। এর ফলে সমস্যায় পড়েন একাধিক এলাকার মানুষ। কিন্তু জুন মাসের শেষের দিকে দিনকয়েক বৃষ্টি না হওয়ায় জল নামতে শুরু করেছিল ঠিকই। পরে ফের প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এর ফলে ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে যায়। বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুজোর আগে বৃষ্টি কমে যাওয়ায় জল নামতে শুরু করে ঠিকই। কিন্তু পুজোর পর ফের বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এনিয়ে প্রায় ছ’বার বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হল। কেশপুর এলাকার বাসিন্দা শ্যামল অধিকারী বলেন, খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি। জল বাড়ছে। প্রশাসন পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে। কবে দুর্ভোগ মিটবে জানি না।  জলমগ্ন ঘাটাল ব্লকের পান্না এলাকার রাস্তা।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)