জলের দরে চোরাই সোনা কেনার অভিযোগে দাসপুর থেকে ধৃত আরও এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী
বর্তমান | ০৭ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: তমলুকে সোনার দোকানে ডাকাতি হওয়া সোনা জলের দরে কিনে পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন আরও এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী। সোমবার দাসপুর থানার খুকুড়দহ থেকে দেবাশিস সামন্ত নামে ওই ব্যবসায়ীকে পাকড়াও করা হয়। এদিন তমলুক থানার পুলিশের দু’টি টিম দাসপুরে রওনা দিয়েছিল। চোরাই সোনা কেনার অভিযোগে গত ৩০সেপ্টেম্বর শ্রীকান্ত মাজি নামে দাসপুরের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। সেদিন পাঁশকুড়ার বাসিন্দা বাপ্পাদিত্য বাগ ও দিলীপ মাইতি নামে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বাপ্পাদিত্য উত্তরপ্রদেশের দাগী দুষ্কৃতীদের ভাড়া করে এনে সোনার দোকানে ডাকাতি করিয়েছিল বলে পুলিশের দাবি। বাপ্পাদিত্য ও দিলীপকে জেরা করে দাসপুরে আরও এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর নাম সামনে আসে। খুকুড়দহের ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীও অল্প দামে তাদের কাছ থেকে চোরাই সোনা কিনেছিল বলে অভিযোগ। পুজোর মধ্যে তার দোকান বন্ধ ছিল। তাছাড়া, শ্রীকান্ত, বাপ্পাদিত্যরা গ্রেপ্তার হতেই সে গা ঢাকা দিয়েছিল। সোমবার দু’টি টিমে ভাগ হয়ে তমলুক থানার পুলিশ দাসপুর রওনা দেয়। সেখান থেকেই ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে পাকড়াও করা হয়। আর একজন পালিয়ে গিয়েছে।
গত ২২সেপ্টেম্বর তমলুক থানার মিলননগরের স্বর্ণ ব্যবসায়ী পূর্ণ অধিকারীর দোকানে তিনজন দুষ্কৃতী ঢুকে প্রায় ৫০লক্ষ টাকা মূল্যের সোনা ডাকাতি করে। সবে দোকান খুলে ধূপ জ্বেলেছিলেন কর্মচারী সুরজিৎ কর্মকার। তখনিই তিনজন ভিতরে ঢুকে পড়ে। ওই কর্মচারীর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে হাত-পা বেঁধে টেবিলের তলায় ঝুঁকিয়ে রেখে দোকান থেকে সব গয়না হাতিয়ে দুষ্কৃতীরা স্কুটিতে চড়ে চম্পট দেয়। ঘটনার তদন্তে নেমে জাতীয় সড়ক সহ বিভিন্ন রুটের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ। তাতেই ডাকাতির কিনারা করা সম্ভব হয়।
দুষ্কৃতীরা তমলুক থানার খারুই হয়ে রূপনারায়ণ নদ বরাবর রাস্তা ধরে কোলাঘাট পেরিয়ে দাসপুরে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, দোকানে ঢুকে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত তিনজন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। তাদের ভাড়া করে এনেছিল পাঁশকুড়ার বাপ্পাদিত্য। সে ও তার প্রতিবেশী দিলীপ সোনার কাজে উত্তরপ্রদেশে ছিল। এদিকে, বাপ্পাদিত্যের সঙ্গে মিলননগরের স্বর্ণ ব্যবসায়ী পূর্ণ অধিকারীর পরিচয় ছিল। সেই সুবাদে পূর্ণবাবুর কাছ থেকে বেশকিছু টাকাপয়সা ধার চেয়েছিল বাপ্পাদিত্য। সেই টাকা না পেয়ে দোকানে ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিল। ভিনরাজ্যের ওই তিন দুষ্কৃতীরা এখনও ধরা পড়েনি। লক্ষ্মীপুজোর পরই তমলুক থানার পুলিশ উত্তরপ্রদেশ রওনা দেবে বলে জানা গিয়েছে।
ওই ডাকাতির পর বাপ্পাদিত্য ও দিলীপ তিন দুষ্কৃতীকে পথ দেখিয়ে দাসপুরে নিয়ে যায়। সেখানে পাঁচজনের মধ্যে চোরাই সোনা ভাগ হয়। তারপর বাপ্পাদিত্য ও দিলীপ তাদের ভাগে পাওয়া চোরাই সোনা দাসপুরের দুই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে বিক্রি করে দেয়। শ্রীকান্ত মাজি ১লক্ষ ৭০হাজার টাকার বিনিময়ে অনেক সোনা কিনেছিল। আর, খুকুড়দহের ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ী তিন লক্ষ টাকার বিনিময়ে ১০লক্ষাধিক মূল্যের সোনার গয়না কিনে নিয়েছিল। তার কাছ থেকে ১০০গ্রাম সোনা উদ্ধার হয়েছে। তমলুক থানার আইসি সুভাষচন্দ্র ঘোষ বলেন, খুকুড়দহ থেকে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র