অতিবর্ষণে ভেঙে পড়ল কাটোয়া শহরের প্রাচীন বাড়ির একাংশ, অল্পের জন্য রক্ষা
বর্তমান | ০৭ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদদাতা, কাটোয়া: অতিবৃষ্টিতে কাটোয়া শহরের বড়বাজারে ভেঙে পড়ল পুরনো বাড়ির একাংশ। রবিবার রাতের এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে শহরে। পুরসভা বাড়িটিকে বিপজ্জনক ঘোষণা করে নোটিশ দিলেও ভ্রুক্ষেপ করেনি মালিকরা। তবে বড়সড় বিপদ থেকে বেঁচেছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা।
কাটোয়া শহরের ন’টি পুরনো বাড়িকে বিপজ্জনক ঘোষণা করেছে পুরসভা৷ বাড়িগুলির দেওয়ালে ‘বিপজ্জনক’ নোটিশও সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে সেইসব বাড়ি ভেঙে ফেলা হচ্ছে না। বাড়ির মালিকরাও উদ্যোগী নয়। ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা৷
কাটোয়া পুরসভার চেয়ারম্যান সমীরকুমার সাহা বলেন, পুরনো ন’টি বাড়ি চিহ্নিত করে পোস্টার দেওয়া হয়েছে৷ ওই বাড়িগুলি থেকে শহরের বাসিন্দাদের দূরে থাকার কথা বলা হয়েছে৷ মালিকদের ভাঙার জন্যও বলা হয়েছে৷ এও বলা হয়েছে যে, পুরসভা ভাঙলে তার খরচ বাড়ির মালিকদেরই বহন করতে হবে। তবুও অনেকেই ভাঙছে না৷ আমরা ভেঙে পড়া বাড়ির মালিককে চিঠি দিয়েছি৷ এবার আমরাই ভেঙে ফেলব৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন কাটোয়া শহরের বড়বাজারের কলাপট্টি এলাকায় একটি পুরানো বাড়ির একাংশ বৃষ্টির জেরে ভেঙে পড়ে৷ বাড়িটির একটি ঝুলন্ত বারান্দা ছিল৷ সেটিই ভেঙে পড়েছে৷ তার ঠিক নীচেই অনেকে ব্যবসা করেন৷ পাশেই মার্কেট রয়েছে৷ সেখানেও বহু মানুষ ব্যবসা করেন৷ অল্পের জন্য তাঁরা রক্ষা পেয়েছেন। ব্যবসায়ী ব্রজ সাহা বলেন, আমি ওই বাড়ির নীচেই বসে লটারির টিকিট বিক্রি করি৷ বিকেল থেকেই সেখানে চুন, সুরকি ঝরে পড়ছিল৷ রাতে আচমকা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে৷ আমরা খুব আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি৷ এখন পুরসভা ওই গলির রাস্তা ঘিরে দিয়েছে ব্যারিকেড করে৷
কাটোয়া শহর বহু পুরনো৷ সাবেকি আমলে শহরের বড়বাজার, ডাবপট্টি সহ বেশ কিছু এলাকায় পুরনো বাড়ি রয়েছে। সেগুলি বটগাছ, আগাছায় ছেয়ে গিয়েছে৷ বিপজ্জনক অবস্থায় ঝুলছে৷ বিপজ্জনক ভাবে বাড়ির বেশ কিছু অংশে ফাটল ধরছে৷
তবুও অনেকেই পুরানো বাপ ঠাকুরদার আমলের স্মৃতি ভাঙতে চান না৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ওই এলাকা দিয়ে বহু মানুষ যাতায়াত করেন৷ বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে পড়লে বহু মানুষের প্রাণহনিও হতে পারে৷ তবুও হুঁশ ফিরছে না৷ তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, বর্ষায় যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে, সে ক্ষেত্রে দায় কে নেবে।
পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে এলাকা ভিত্তিক পরিদর্শন করে সার্ভে করা হয়েছিল। নোটিশ দিয়ে বিপজ্জনক অংশ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল৷ অনেকে নিজে থেকে ভেঙেছে৷ আবার কেউ কেউ এখনও ভাঙতে উদ্যোগী হয়নি৷ পুরসভার দাবি, বার বার জানানো সত্ত্বেও কেউ কর্ণপাত করছে না।