নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: চলতি বছর শহরে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার প্রকোপ অনেকটাই কম। যদিও আত্মসন্তুষ্টিতে না ভুগে সচেতনতা প্রচার বাড়িয়েছে কলকাতা পুরসভা। উৎসবের মরশুমে দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে ডেঙ্গু নিয়ে সতর্ক থাকতে রীতিমতো নির্দেশনামা জারি করা হয়েছিল এবার। বৃষ্টির কারণে ডেঙ্গু সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা করছিলেন পুর-স্বাস্থ্যকর্তারা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, পুজোর মরশুমে ডেঙ্গু সংক্রমণ কিছুটা বাড়লেও তা নাগালের বাইরে চলে যায়নি। সংক্রমণ বৃদ্ধির গ্রাফ (ষষ্ঠী পর্যন্ত) মাত্রাতিরিক্ত ঊর্দ্ধমুখী নয়। অর্থাৎ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, পুজোর মরশুমেও সেই ধারাই বজায় রয়েছে। সংক্রমণের হার বাড়েনি। এই তথ্য হাতে আসার পর স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা স্বস্তিতে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্তারা।
পুরসভার সর্বশেষ (২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হিসেব) তথ্য বলছে, শহরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৭৩৮ জন। যা আগের সপ্তাহে (২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) ছিল ৬৬২। অর্থাৎ নতুন করে শহরে ৭৬ জনের ডেঙ্গু ধরা পড়েছে। এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘গত কয়েক মাস ধরে সংক্রমণ বৃদ্ধির যে গ্রাফ, তা আর ঊর্দ্ধমুখী হয়নি খুব একটা। সমান্তরাল রয়েছে। তবে পুজোর মধ্যেও তো বৃষ্টি হয়েছে। সেক্ষেত্রে দশমীর পর যে সাপ্তাহিক রিপোর্ট মিলবে, তাতেই সংক্রমণের চিত্রটা আরও স্পষ্ট হবে।
মণ্ডপের বাঁশের মাথায় ও ত্রিপলের ভাঁজে যাতে জল না জমে, পুজো কমিটির কর্মকর্তাদের তা খেয়াল রাখতে বলা হয়েছিল। এই উদ্যোগের ফলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা গিয়েছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই সময়টা ডেঙ্গুবাহক মশার বংশবৃদ্ধির উপযুক্ত মরশুম। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই লাগাতার ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তবে সেটা স্বাভাবিক। কয়েক সপ্তাহ ধরে যা দেখা যাচ্ছে, তাতে আক্রান্তের সংখ্যা গতবারের তুলনায় কম। তার উপর দুর্গাপুজোর সময়ও বৃষ্টি হয়েছে। মণ্ডপ চত্বরে কোথাও যদি জল জমে থাকে, সেখানে ডেঙ্গু মশার বংশবৃদ্ধির আদর্শ পরিবেশ গড়ে উঠবে। তাই পুজো কমিটিগুলিকে মণ্ডপের আশপাশ পরিষ্কার রাখতে বলা হয়েছিল। সংক্রমণ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ৬০ থেকে ৭৫-এর মধ্যেই ঘোরাফেরা করছে। সংক্রমণ-বৃদ্ধির এই হার মোটামুটি ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত একই রাখতে পারলে বছর শেষেও ডেঙ্গু নাগালেই থাকবে বলে আশাবাদী কর্তারা। তবে ২০২৩ সালে যেমন মাত্রাতিরিক্ত ডেঙ্গু হয়েছিল শহরে, তা এবার হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে অবশ্য অনেকটাই কম ছিল
সংক্রমণ। এবারও সেই ধারা বজায় রাখতে তৎপর কলকাতা পুরসভা।