• ‘নিম্নমানের রাজনীতি, সুযোগের সন্ধানে নাটক’, নাগরাকাটাকাণ্ডে মোদীর এক্স পোস্টের নিন্দায় মমতা
    আনন্দবাজার | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
  • জলপাইগুড়ির নাগরাকাটায় সোমবার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের হামলার নিন্দা করে সোমবার রাতে এক্স হ্যান্ডলে বাংলা এবং ইংরেজিতে পোস্ট করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দুষেছিলেন রাজ্য সরকার এবং শাসকদল তৃণমূলকে। দু’ঘণ্টার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগের ‘জবাব’ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই এক্স পোস্টেই। মমতার অভিযোগ, উত্তরবঙ্গে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যেও রাজনীতি করতে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী।

    পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘এটি দুর্ভাগ্যজনক এবং গভীর ভাবে উদ্বেগজনক যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী যথাযথ তদন্তের অপেক্ষা না করেই একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের রাজনীতিকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিশেষ করে যখন উত্তরবঙ্গের মানুষ ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস পরবর্তী পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করছেন।’’ ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান চলাকালীন বিজেপির নেতারা স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনকে কিছু না জানিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী-সহ বিশাল কনভয় নিয়ে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

    খগেন-শঙ্করের উপর হামলার জন্য রাজ্য ও শাসকদলের নাম জড়ানোর নিন্দা করে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী কোনও যাচাই করা প্রমাণ, আইনি তদন্ত বা প্রশাসনিক প্রতিবেদন ছাড়াই তৃণমূল কংগ্রেস এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সরাসরি দোষারোপ করেছেন। এটি কেবল নিম্নমানের রাজনীতির উদাহরণ নয়, এটি প্রধানমন্ত্রী যে সাংবিধানিক নীতি বজায় রাখার শপথ নিয়েছেন তার লঙ্ঘন। যে কোনও গণতন্ত্রে আইনকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হয়। কেবলমাত্র আইনি প্রক্রিয়াই দোষী চিহ্নিত করতে পারে। কোনও রাজনৈতিক টুইট নয়।’’

    সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দিয়েছেন, যে নাগরাকাটায় হামলার ঘটনা ঘটেছে, সেই এলাকার বিধায়ক বিজেপির। দেশের সর্বোচ্চ সরকারি পদে থাকা সত্ত্বেও মণিপুরে হিংসা শুরুর ৯৬৪ দিন পরে মোদী সে রাজ্যে গিয়েছিলেন কেন, তা নিয়েও খোঁচা দিয়েছেন মমতা। তাঁর মন্তব্য, ‘‘এ ক্ষেত্রে (নাগরাকাটাকাণ্ড) প্রধানমন্ত্রীর এই আকস্মিক উদ্বেগ সহানুভূতির চেয়ে বরং সুযোগ সন্ধানের জন্য রাজনৈতিক নাটকের মতো বলে মনে হচ্ছে।’’

    এর পরেই প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা— ‘‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি, নির্বাচিত রাজ্য সরকারের কথা শুনুন। কেবল আপনার দলের সহকর্মীদের কথা নয়। আপনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী, কেবল বিজেপির নয়। আপনার দায়িত্ব জাতি গঠনের, আখ্যান গঠনের নয়। এই সংকটময় মুহূর্তে, আসুন আমরা বিভেদ আরও গভীর না করি। আসুন আমরা দলীয় লাইনের বাইরে ঐক্যবদ্ধ হই।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)