দুর্গাপুজো বা কালীপুজোর মতোই, গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বহু প্রাচীন লক্ষ্মীপুজো। কোথাও স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুজো শুরু হওয়ার জনশ্রুতি, আবার কোথাও নিজেদের আর্থিক সমৃদ্ধি ঘটাতে লক্ষ্মীপুজো শুরু হয়। কাঁকসা ব্লকে রয়েছে তেমনই বেশ কয়েকটি পুজো।
কাঁকসার সুন্দিয়ারা গ্রামের ঘোষ পরিবারের লক্ষ্মীপুজো প্রায় তিনশো বছরের পুরনো। পরিবারের পূর্বসূরি গোবিন্দ ঘোষ এই পুজো শুরু করেন। পরিবারের বর্তমান সদস্য নন্দগোপাল ঘোষ জানান, কথিত রয়েছে, গোবিন্দ ঘোষ স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পুজো শুরু করেন। সে সময়ে পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভাল ছিল না। লক্ষ্মীপুজো শুরু করার পরেই পরিবারের আর্থিক অবস্থা ফেরে। তার পর থেকে প্রতি বছর লক্ষ্মীপুজো হয়ে আসছে। বাড়ির ভিতরে এই পুজো শুরু হয়েছিল। এখন নতুন একটি মন্দির তৈরি করা হয়েছে। এক সময়ে আশপাশের গ্রামের বহু মানুষকে এখানে খাওয়ানোর ব্যবস্থা হত। এখন তার বহর একটু কমলেও, এখনও বহু মানুষ পুজোয় আসেন। গ্রামের একমাত্র লক্ষ্মীপুজো এটি। নন্দগোপাল ঘোষ ও সুকুমার ঘোষ বর্তমানে পুজোর দায়িত্বে রয়েছেন। পুজো উপলক্ষে বাইরে থেকে অনেক আত্মীয়স্বজন আসেন।
ত্রিলোকচন্দ্রপুর গ্রামের পাল পরিবারের লক্ষ্মীপুজো একশো বছরেরও বেশি সময় ধরে হয়ে আসছে। পরিবারের বধূ দক্ষবালা পাল এই পুজো শুরু করেন। বর্তমান সদস্যেরা জানান, বাড়িতে লক্ষ্মী ও সরস্বতী, দুই দেবীর পুজো হয়ে
থাকে। লক্ষ্মীপুজোর দায়িত্ব নেন দক্ষবালা পাল। একটি নির্দিষ্ট ঠাকুরঘর রয়েছে, যেখানে প্রতি বছর কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো হয় প্রতিমা তৈরি করে। লক্ষ্মী প্রতিমার দুই পাশে থাকেন জয়া ও বিজয়া। পাল পরিবারের বর্তমান সদস্য জগদীশ্বর পাল বলেন, এখানে চার দিন ধরে লক্ষ্মীপুজো হয়, যা অন্য পুজোর থেকে একটু আলাদা। পুজো শেষে গ্রামের মানুষজনকে প্রসাদ খাওয়ানোর ব্যবস্থা থাকে।