• দক্ষিণ ও উত্তরে বন্যার জন্য কেন্দ্রকে দুষলেন মানস, বৈঠকের পরে দিলেন সুরাহার আশ্বাস
    আনন্দবাজার | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
  • দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্র সরকার ও ডিভিসিকেই দায়ী করলেন জলসম্পদ মন্ত্রী মানস ভূঁইয়া। তাঁর অভিযোগ বাংলার প্রতি অন্য়ায় করে বাংলাকে পচিয়ে মারার চেষ্টা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে তাঁর বার্তা, দ্রুত পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে সার্বিক ভাবে প্রশাসন প্রস্তুত।

    ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ঘাটাল মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে রবিবার বৈঠকে বসেছিলেন মানস। ওই বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি দাবি করেন, ঘটাল, দাসপুর, চন্দ্রকোনা, কেশপুর, ডেবরা, পাঁশকুড়া, গড়বেতা-সহ বিভিন্ন অঞ্চলে যখন জল শুকিয়ে এসেছিল তখনই ফের রাজ্যকে না জানিয়ে ডিভিসি জল ছাড়ে। যার ফলে ষষ্ঠবার বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এই সব অঞ্চলে। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার ৬৫ হাজার, শুক্রবার ৭০ হাজার, শনিবার ৭৩ হাজার ৬৫৬ ও রবিবার ৭০ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে ডিভিসি। চার দিনে প্রায় দু’লক্ষ ৮০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। উৎসবের সময় এই পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্র ও ডিভিসিকে দায়ী করেন তিনি। বলেন, ‘‘রাজ্যের কথা শোনা হচ্ছে না।’’ তাঁর দাবি, আগাম বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য সভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ও তিনি একাধিকবার দরবার করেছেন। অনুরোধ করা হয়েছে কেন্দ্র-রাজ্য আলোচনা করে জল ছাড়ার। তবে কোনও কথাই শোনা হয়নি। মানসের দাবি, ১৫-২০ বছর সংস্কার না হওয়ার ফলে ব্যারেজগুলির জলধারণ ক্ষমতা কমেছে। তাই ডিভিসিকে একটুতেই জল ছাড়তেই হয়। তবে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে নিয়মিত নজরদারি ও সময় অনুপাতে নির্দিষ্ট পরিমাণ জল ছাড়লে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় না।

    উত্তরের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, ভূটান থেকে ৭২টি নদী উত্তরবঙ্গে এসেছে। সেই সব নদীর জলের জন্যই বন্যা। আরও দাবি, ইন্দো-ভুটান রিভার কমিশনের কথা বারবার বলা হলেও কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও ভাবনা নেই। তিনি জানান, ভুটান থেকে আসা জল নিয়ন্ত্রণের জন্য যেখানে পাঁচটি গেট আছে, সেখানে প্রয়োজন ৫০টি গেট। প্রয়োজন দুই দেশের মধ্যে তথ্য বিনিময়। এই প্রসঙ্গে মন্ত্রীর দাবি, ভুটানের সঙ্গে চুক্তি করতে পারে ভারত সরকার। সেই দাবিই বার বার জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রশাসন প্রস্তুত বলেও জানান মন্ত্রী। তাঁর দাবি, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, ত্রাণ থেকে স্বাস্থ্য—সমস্ত ব্যবস্থাই রয়েছে। দ্রুত পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হবে।

    এ দিনের বৈঠকে মন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস, মহকুমা সেচ দফতরের আধিকারিক উজ্জ্বল মাখাল, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের কৃষি ও সেচ কর্মাধ্যক্ষ আশীষ হুদাইত, ঘাটাল-দাসপুর-১ ও ২ ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক— সহ ব্লক, মহকুমা ও জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)