• বৃষ্টির বিপাকে ‘লক্ষ্মী গ্রাম’-এর সর্বজনীন পুজোর আয়োজন
    আনন্দবাজার | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
  • খরাতে নষ্ট হয়েছিল ফসল। বাসিন্দারা দুর্দশা কাটাতে শুরু করেছিলেন লক্ষ্মীপুজো। এবার সেই গ্রামেই বৃষ্টির বাধায় লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন নিয়ে বিপাক বাড়ছে। মন খারাপ শিল্পশহর হলদিয়া সংলগ্ন চাউলখোলা, কিসমত শিবরামনগর, শোভারামপুরের বাসিন্দাদের। এই সব গ্রামের বাসিন্দারা শারোদৎসব বলতে লক্ষ্মীপুজোকেই বোঝেন।

    বেশ কয়েক দশক আগের কথা। হলদিয়া তখন কৃষিকাজের উপর নির্ভর ছিল। এক বছর খরায় নষ্ট হয়ে গিয়েছিল ফসল। দুর্দশা মোচনে ধনদেবী লক্ষীর পুজো করেছিলেন গ্রামের মানুষ। একসময় সেই আয়োজন সর্বজনীন রূপ পায়।

    শিল্পশহর সংলগ্ন হলদিয়া উন্নয়ন ব্লকের দেভোগ গ্রাম পঞ্চায়েতের চাউলখোলা, কিসমত শিবরাম নগর ও শোভারামপুরে কমবেশি ১৫টি সর্বজনীন লক্ষ্মীপুজো হয়। এর মধ্যে ৮-১০টি ক্লাবে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে পুজো আয়োজন করা হয়। স্থানীয়দের কাছে যা ‘লক্ষ্মী গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত। এ বছরও থিমের যুদ্ধ হওয়ার কথা গোটা গ্রামে। দুর্গাপুজোর দশমীর পর শুরু হয়েছিল প্রস্তুতি। কিন্তু তাল কেটেছে নিম্নচাপের বৃষ্টি। থমকে গিয়েছে মণ্ডপের কাজ।৬৯তম বছরে পা দিয়েছে চাউলখোলা অগ্রণী সঙ্ঘের পুজো। ‘গ্রাম বাংলার ঘরের লক্ষী’ থিমের আদলে সেজে উঠছে মণ্ডপ। বাজেট প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। কিসমত শিবরাম নগর সমন্বয় ক্লাব নারী নির্যাতন ও বাল্যবিবাহ রোধে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে থিম করেছে 'আমি সেই মেয়ে'। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, মণ্ডপের কাজ অনেক বাকি। এমনকি মাটির প্রতিমা রং শুকনো হতে অনেক সময় লাগছে। ৪৯ বছরে পড়েছে কিসমত শিবরাম নগরের ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র স্মৃতি সঙ্ঘের লক্ষ্মীপুজো। 'মোবাইল নয়, বরং বই থাকুক' থিমের আদলে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে। কিন্তু সেই কাজও যথেষ্ট বাকি। আবার অনেক জায়গায় জলে ভিজে নষ্ট হচ্ছে থিমের পুজো মণ্ডপ।

    স্থানীয় বাসিন্দা তথা পেশায় শিক্ষক অনুপকুমার পাঁজা বলেন, ‘‘গ্রামে ছোট দুর্গাপুজো হয়। কিন্তু আমাদের কাছে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোই হচ্ছে দুর্গাপুজো। আকর্ষণীয় থিমের মণ্ডপ দেখতে হলদিয়া শহর এবং মহিষাদল থেকেও লোকেরা আসেন। বাড়ির আত্মীয়রাও চলে আসতেন পুজোর একদিন আগে। মণ্ডপগুলোই তো তৈরি হয়নি। এ রকম চললে অনুষ্ঠানও হবে কিনা সন্দেহ আছে।’’হলদিয়ার মতোই জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে লক্ষ্মীপুজো হয় নন্দকুমারের সাঁউতানচকে। বড় বাজেটের লক্ষ্মীপুজো হয় ৮-১০টি। এ বছর বৃষ্টিতে তাদেরও প্রস্তুতিতে সমস্যা হচ্ছে। স্থানীয় দু’টি ক্লাবের কর্মকর্তা চতুর্দীপ সামন্ত এবং নারায়ণ বাগ বলেন, ‘‘সারাদিন ধরে বৃষ্টি হলে মণ্ডপের কাজ হবে কী করে! এ রকম পরিস্থিতি আগে
    কোনওদিন হয়নি।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)