• আলোর রোশনাইয়ে ভাসতে প্রস্তুত খালনা
    আনন্দবাজার | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
  • আকাশের মুখ বেজার। আজ, সোমবার রাতে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো হলেও চাঁদের দেখা মিলবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কিন্তু তার জন্যে শ্রী-আরাধনায় কোনও ত্রুটি রাখছে না খালনা। হাওড়ার আমতা-২ ব্লকের এই গ্রামটি খ্যাতি লাভ করেছে লক্ষ্মীপুজোর জন্য। চলতি বছরের পুজোয় এলাকাকে আলোর রোশনাইয়ে ভাসিয়ে প্রস্তুত এই ‘লক্ষ্মীর গ্রাম’।

    এই গ্রামের লক্ষ্মীপুজো হার মানায় আশে পাশের দুর্গাপুজোর জাঁককেও। পুলিশ সূত্রের খবর, এই গ্রামে বড় বাজেটের লক্ষ্মীপুজো হয় ২৫টি। কয়েকটি পুজোর বাজেট সাত-আট লক্ষ টাকা। বেশিরভাগ পুজোর মণ্ডপ তৈরি করেন উদ্যোক্তারাই। মণ্ডপ তৈরি শুরু হয় অন্তত আড়াই মাস আগে।

    পুজোর মণ্ডপেও থিমের ছড়াছড়ি। খালনা কোহিনুর ক্লাবের পুজো এ বারে পড়ল ১৫৭ বছরে। তাদের থিম ‘অপারেশন সিঁদুর’। থিমের পরিকল্পনা উদ্যোক্তাদেরই। পেশায় গাড়ি চালক সব্যসাচী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমাদের ক্লাবের সদস্যরাই শনি রবি ও ছুটির দিনগুলিতে মণ্ডপ তৈরি করেছি। কোনও ডেকরেটরের উপরে ভরসা করিনি।’’ ক্লাবের সদস্য পেশায় অধ্যাপক অজয় দাস বলেন, ‘‘লক্ষ্মীপুজো আমাদের কাছে আবেগের জায়গা। তাই আমরা নিজেরাই মণ্ডপ তৈরি করি। এটাই আমাদের রীতি।’’

    খালনার রাজবংশীপাড়া কালীমাতা তরুণ সঙ্ঘের এ বারের থিম পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডির উডেন ডল হাউস। এই পুজোও শতাধিক বছরের পুরনো। এই পুজোর মণ্ডপ মাসাধিক কাল ধরে তৈরি করেছেন ক্লাব সদস্যরা। অন্যতম সদস্য সুভাষ বোধক বলেন, ‘‘আমাদের ক্লাবের অধিকাংশ সদস্য গয়নার কারিগর বা চাষি পরিবারের। কিন্তু পুজোর উৎসাহ আমাদের সবার মধ্যে সমান। তাই পুজোর মণ্ডপ আমরা নিজেরাই তৈরি করি।’’ পুজোর মণ্ডপ ও অলঙ্করণে হাত লাগায় ছাত্রেরাও।

    কৃষ্ণরায়তলা লক্ষ্মীপুজো কমিটির পুজো এ বার পড়ল ১২৫ বছরে। তাদের থিম ‘ছত্রাক’। থিম যার মাধ্যমে মস্তিস্কপ্রসূত সেই শৌভিক রায় বলেন, ‘‘পরিবেশ সচেতনতার বার্তা দিতেই এই থিম করেছি।’’

    দু’একটি ক্লাব অবশ্য ডেকোরেটর নির্ভর। তাদের পুজোর বয়স কম। তাদের অন্যতম হল ‘আমরা সবাই’ ক্লাব। এই ক্লাবের পুজো এ বার পড়েছে ৫৯ বছরে। থিম ‘সভ্যতার বিবর্তন’। বাজেট সাত লক্ষ টাকা।

    খালনার লক্ষ্মীপুজো দেখতে ভিড় হয় লাখো মানুষের। এটাই অনন্যতা দেয় লক্ষ্মীপুজোকে। তবে পুলিশ-প্রশাসন জানিয়েছে, ভিড় সামলাতে তারা প্রস্তুত।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)