• সঙ্গে নেই পানীয় জল, না আছে খাবার! পাহাড় থেকে শিলিগুড়ি ফিরছেন বিধ্বস্ত পর্যটকরা
    প্রতিদিন | ০৭ অক্টোবর ২০২৫
  • অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: ভয়াবহ অভিজ্ঞতা নিয়ে পাহাড় থেকে ফিরছেন পর্যটকরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় গাড়ির লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে শিলিগুড়ি ফিরতে পারছেন। রাস্তায় না আছে জল, না আছে খাবার। ফেরার পথে বিভিন্ন জায়গায় ধস। এসব দেখেই তাঁরা আতঙ্কিত। তবে তাঁদের নিজের গন্তব্যে ফিরতে তেমন অসুবিধা হচ্ছে না বলে জানানো হচ্ছে। কারণ, উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা পর্যটকদের জন্য স্পেশাল বাসের ব্যবস্থা করেছে।

    পুজোর ছুটি কাটাতেই পাহাড়ে ভিড় জমিয়েছিলেন পর্যটকরা। কিন্তু এই সফর যে এতটা বিভীষিকাময় হয়ে উঠবে তা কেউ ধারণাই করতে পারেনি। অনেকে ঘোরা শেষ করে ফিরেছেন। অনেকে আবার আতঙ্কে সফর কাটছাঁট করে ফিরে গেলেন। দু’চোখে আতঙ্ক নিয়ে যখন শিলিগুড়ির তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসে এসে পৌঁছচ্ছেন, তখন তাঁরা ক্লান্ত। এক জায়গায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন। কথাও বলতে চাইছেন না। অনেকে দার্জিলিং থেকে, আবার অনেকে সিকিম থেকে ফিরছেন। কলকাতার কোন্নগরের বাসিন্দা সুদীপ বোস বলেন, “আমরা সিকিম থেকে নামার সময় গাড়ির লাইনে ফেঁসে যাই। প্রায় হাজার খানেক গাড়ি তখন লাইনে। সকালে রওনা দিয়ে রাতে পৌঁছতে পেরেছি। জল নেই, খাবার বলতে শুকনো কিছু ছিল, তাই। আসার পথে দেখলাম ধস নেমেছে। আতঙ্কের মাঝেই আমরা ফিরলাম। ভয়াবহ দৃশ্য এখনও চোখে ভেসে আছে।”

    অন্যদিকে, হাওড়ার বাসিন্দা সুকান্ত দাস বলেন, “পাঙ্খাবাড়ির রাস্তা দিয়ে এলাম। দশমীর দিন দার্জিলিং এসেছিলাম। মিরিকের অবস্থা একদম শেষ। ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা নিয়ে বাড়ি ফিরছি। এরকম বৃষ্টি আর ভয়াবহ তিস্তা আগে দেখিনি। কিন্তু আতঙ্ক নিয়ে ফিরলেও সুযোগ পেলে আবার পাহাড়ে আসব।” এছাড়া বারুইপুরের পিংকি চক্রবর্তী বলেন, “অত জোরে বৃষ্টি দেখে খুব ভয় পেয়েছিলাম। তারপর যখন শুনলাম ধস নেমে মানুষ মারা গিয়েছে। তখন থেকেই ভাবছিলাম কখন শিলিগুড়ি ফিরব। এবার শান্তিতে বাড়ি যাব। তবে এই ঘটনা জীবনেও ভুলব না।”

    এদিকে এনবিএসটিসি বাসের ব্যবস্থা করায় সকলেই খুশি। সুকান্ত দাসের কথা বন্দে ভারতে টিকিট ছিল, তা কনফার্ম হয়নি। এখানে এসে বাস পেয়ে গেলাম। এদিন বাস টার্মিনাসের বাইরে শিলিগুড়ি পুরনিগমের পক্ষ থেকে পর্যটকদের জন্য একটি হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে। এদিকে বাসের বিষয়ে এনবিএসটিসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর দীপঙ্কর পিপলাই বলেন, “আমাদের যে বাসগুলো আছে, সেগুলো চলছেই। তাছাড়াও বিভিন্ন ডিপো থেকে বাস এনে কলকাতার জন্য অতিরিক্ত বাস চালাচ্ছি। রবিবার ও সোমবার আমরা সামলে দিয়েছি। এবার মঙ্গলবারটা সামলে দিলেই হবে। তবে বাসের চাহিদা রাতে বেশি। কারণ পাহাড় থেকে পর্যটকদের ঘুরপথে নামতে প্রায় রাত হয়ে যাচ্ছে।” প্রসঙ্গত রবিবার রাত তিনটে অবধি মোট ১৫টি বাসে ৮০০ জন পর্যটক কলকাতা ফিরেছেন। এছাড়াও বেসরকারি বাসেও বহু পর্যটক ফিরেছেন। তবে তাঁদের থেকে যাতে ভাড়া বেশি না নেওয়া হয় সেই নির্দেশ দিয়েছে পরিবহন দপ্তর।
  • Link to this news (প্রতিদিন)