• আটকে অনেকে, পাহাড়ে সফর বাতিলের ঝোঁক
    আনন্দবাজার | ০৬ অক্টোবর ২০২৫
  • এক রাতের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দার্জিলিং-সহ উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। দুর্যোগে অন্তত ১৭ জনের মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। বিচ্ছিন্ন পাহাড়-ডুয়ার্সের বহু এলাকা। পুজোর ছুটির মরসুমে এই পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গে গিয়ে আটকে পড়েছেন জেলারও অনকে। কেউ কেউ আবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া দেখে দর্জিলিং সফর বাতিল করে দিচ্ছেন।

    আটকে পড়া পর্যটকদের অন্যতম অলিভিয়া জানা। আদতে মেদিনীপুরের বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে বোলপুরে থাকেন তিনি। শনিবারই দার্জিলিং ম্যালে পৌঁছে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছেন। তাঁর সঙ্গে পরিবারের সদস্য, আত্মীয়, পরিচিতরা মিলিয়ে মোট ১৪ জন রয়েছেন। অলিভিয়া বলেন, ‘‘ঘোরার আনন্দ কার্যত ধুয়ে গিয়েছে। এখন বাড়ি কী ভাবে ফিরব সেটাই সবচেয়ে চিন্তার।’’ তাঁর সঙ্গে রয়েছেন তাঁর বোন অভিষিক্তা জানা, কৃষ্ণেন্দু মান্না। উভয়ে বোলপুরে থেকে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। এই পরিস্থিতিতে দুশ্চিন্তা গ্রাস করেছে তাঁদেরকেও।

    সিউড়ি থেকে দশমীর দিন সপরিবার কালিম্পং বেড়াতে গিয়েছিলেন সিউড়ির প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাস। রবিবার দুপুরের পর এ দিনই ঘুরপথে প্রায় পাঁচ ঘন্টায় শিলিগুড়ি নেমে এসে হাঁফ ছেড়েছেন। বিশ্বজিৎ বলছেন, ‘‘রাতভর বৃষ্টি হয়েছে কালিম্পংয়ে। দার্জিলিং যাওয়ার রাস্তা ঠিক থাকলেও শিলিগুড়ি আসার মূল রাস্তার উপরে নদীর জল উঠে এসেছে বলে ঘুরপথে দু’ঘণ্টার পথ পাঁচ ঘণ্টায় এলাম।’’ তাঁর স্ত্রী স্বর্ণচাঁপা দাস বলছেন, ‘‘একাদশীতে ঠিক মতো ঘুরেছি। কিন্তু কাল হোটেলেই কার্যত বন্দি ছিলাম। বৃষ্টি না হলে সফরটা ভাল ভাবে হত।’’ পেশায় পঞ্চায়েত কর্মী, রামপুরহাটের নিশ্চিন্তপুরের বাসিন্দা ইন্দ্রনীল পাল একাদশীর দিনে দার্জিলিং পৌঁছেছেন। সঙ্গে স্ত্রী ও দুই সন্তান। তিনি বললেন, ‘‘সোমবার রাতে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ট্রেনের টিকিট আছে। কিন্তু কী ভাবে ফিরবেন তা নিয়েই চিন্তা হচ্ছে।’’

    বোলপুরের একটি ভ্রমণ সংস্থার পক্ষে জানানো হয়েছে, দু-চারদিনের মধ্যে যাঁদের বুকিং ছিল সফর বাতিল করে দিচ্ছেন তাঁদের অনেকেই। তাঁদের অন্যতম বোলপুর কলেজ পল্লির বাসিন্দা ব্যবসায়ী রিপন ইসলাম। তিনি বললেন, ‘‘দু’মাস আগে দার্জিলিং যাওয়ার বুকিং সেরেছিলাম। সাত তারিখে বেরনোর কথা ছিল। কিন্তু এই দুর্যোগে আর ঝুঁকি নিতে পারলাম না। তাই বাতিল করে দিলাম।’’

    সিউড়ির একটি ভ্রমণ সংস্থার কর্ণধার দীপশঙ্কর বিষ্ণু বলছেন, ‘‘মানুষ বেড়াতে যান আনন্দ করতে। কেই বা উদ্বেগ নিয়ে বেড়াতে যাবেন?’’ রামপুরহাটের পর্যটন ব্যবসায়ী তড়িৎশেখর দত্ত বলেন, ‘‘এ বছর কাশ্মীরে সমস্যা রয়েছে। মেঘভাঙা বৃষ্টির জন্য উত্তরাখণ্ড-সহ উত্তর ভারতের পার্বত্য এলাকায় ধসের ঘটনা ঘটেই চলেছে। ভয়ে অনেক পর্যটক অন্য ভ্রমণস্থল বাছছেন। বীরভূম থেকে একটি দল নিয়ে এই মুহূর্তে মহারাষ্ট্র এলাম।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)