পাহাড়ে গিয়ে হয়রান জেলার কিছু পর্যটক, ভ্রমণ বাতিল অনেকের
আনন্দবাজার | ০৭ অক্টোবর ২০২৫
উত্তরবঙ্গের পাহাড় এবং ডুয়ার্সে দুর্যোগ অব্যাহত। গত দু’দিনে সেখানে ধস এবং দুর্ঘটনায় অন্তত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে পাহাড়ে বেড়াতে গিয়ে আটকে পড়েছেন বা হয়রানির শিকার হচ্ছেন পর্যটকেরা। সেই তালিকায় মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর, লালগোলা, অরঙ্গাবাদের বেশ কিছু পর্যটকও রয়েছেন। তবে তাঁরা সকলেই নিরাপদে আছেন বলেও জানা গিয়েছে।
তিন দিন আগে গাড়ি নিয়ে পাহাড়ে বেড়াতে গিয়েছেন জঙ্গিপুরের ১৮ জন বাসিন্দা। সকলেই পেশায় আইনজীবী। রবিবার তাঁদের দার্জিলিং থেকে রওনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাস্তায় ধসের জেরে আপাতত তাঁরা সেখানেই রয়ে গিয়েছেন। তবে নিরাপদেই আছেন। তাঁদের মধ্যে এক জন ফরাক্কার রবিউল আলম এ দিন ফোনে বলেন, ‘‘দার্জিলিঙের পর্যটক গিজগিজ করছে। অধিকাংশই বাঙালি। ধসে রোহিণী ও দিলারামের রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ। মিরিকও যাওয়া যাচ্ছে না।’’ তাঁর বন্ধু মহম্মদ সাইফুদ্দিন জানান, ধস নিয়ে আতঙ্কের আবহ কিছুটা কেটেছে।
লালগোলার কৃষ্ণপুরের লিচুতলা ও অরঙ্গাবাদের তিনটি পরিবার এক সঙ্গে রবিবার উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন। এ দিন ভোররাতে তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেস থেকে তাঁরা এনজিপি স্টেশনে নামেন। প্রবল বৃষ্টির জেরে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে। দু’দিন দার্জিলিঙে এবং এক দিন তাঁদের কালিম্পঙে থাকার কথা। কিন্তু এ দিন ট্রেন থেকে নামার পরেই দার্জিলিঙের হোটেল থেকে ফোন করে তাঁদের জানানো হয়, তাঁরা যেন পাহাড়ে না ওঠেন। শেষ পর্যন্ত এনজিপি স্টেশনের কাছে তাঁরা একটি লজে ঠাঁই নিয়েছেন।
ওই দলের সদস্য সাইফুর রহমান ফোনে বলেন, ‘‘আমরা পাহাড়ে না গিয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি। আমাদের ফেরার ট্রেনের টিকিট কাটা রয়েছে ৮ অক্টোবরের। তার আগের কোনও টিকিট পাইনি। পাঁচ জন শিশু-সহ মোট ১১ জন এনজেপি স্টেশনের কাছে একটি লজে রয়েছি। কী করব, তা ভেবে
পাচ্ছি না।’’
বহরমপুরের বাসিন্দা হামিদুল ইসলাম সপরিবার কালিম্পঙের ডেলোয় রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এনজিপি স্টেশন থেকে সকাল সাড়ে ১০টার সময় একটি গাড়ি করে আমরা কালিম্পঙে ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। লাভা হয়ে কালিম্পঙে যাওয়ার কথা থাকলেও আবহাওয়ার জন্য ঘুরপথে কালিম্পঙে পৌঁছতে হয়।’’ এ দিন অবশ্য কালিম্পঙে বৃষ্টি হয়নি বলে জানান তিনি।
অনেকে আবার পাহাড় সফর বাতিলও করেছেন। লালগোলার বাসিন্দা মহম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘‘সপরিবার ডুয়ার্স আর দার্জিলিং ঘোরার পরিকল্পনা করেছিলাম। ২-৬ অক্টোবর ডুয়ার্স-দার্জিলিঙে থাকার কথা ছিল। ট্রেনের টিকিট থেকে শুরু করে রিসর্ট, হোটেল বুক করা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু খারাপ আবহাওয়া দেখে শেষ মুহূর্তে বেড়াতে যাওয়া বাতিল করেছি।’’ মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র এ দিন বিকেলে বলেন, ‘‘অনেকে উত্তরবঙ্গ ঘুরতে গিয়েছেন। তবে সেখানে কেউ আটকে পড়েছেন বলে আমাদের কাছে খবর আসেনি।’’