কেরোসিনে জিএসটি বহাল পুরানো হারেই, সংকটে বাংলার গরিব মানুষ
বর্তমান | ০৭ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সাধারণ মানুষের জন্য আর্থিক সাশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে বিভিন্ন পণ্যে জিএসটির হার কমানোর জন্য কৃতিত্ব দাবি করছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। বেশ কিছু পণ্য থেকে জিএসটি পুরোপুরি তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গরিব মানুষদের একটা বড়ো অংশ এখনও রান্নাবান্না করা বা ঘরে আলো জ্বালানোর জন্য যে কেরোসিন তেল ব্যবহার করেন তার উপর ৫ শতাংশ জিএসটি অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। রেশন দোকান থেকে গ্রাহক কেরোসিন তেল কিনলে ৫ শতাংশ জিএসটি দিতে হতো, তার কোনও পরিবর্তন করা হয়নি। রেশন দোকানের চাল-গম-চিনির উপর জিএসটি নেই। কিন্তু কেরোসিনের উপর জিএসটি প্রথম থেকেই আছে। পেট্রো পণ্যের মধ্যে একমাত্র কেরোসিনের উপর জিএসটি নেওয়া হয়। বাকি সব পেট্রোপণ্যের উপর রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিক্রয় কর এবং সেস আছে। কেরোসিনের উপর যে ৫ শতাংশ জিএসটি আছে তা তুলে নিলে দাম কমে গরির মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেতেন। কিন্তু তা হল না। বরং অক্টোবর মাসে দাম প্রতি লিটারে প্রায় ১ টাকা ৬০ পয়সা করে বাড়ছে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মিলিয়ে দু-মাসে লিটারে প্রায় ২ টাকা দাম বাড়ল রেশনের কেরোসিনের। প্রতিমাসে রেশনের কেরোসিনের ইশ্যু প্রাইস নির্ধারণ করে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি। তার ভিত্তিতে বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করে রাজ্য খাদ্যদপ্তর। ইশ্যু প্রাইসের সঙ্গে পরিবহণ খরচ, ডিলার-ডিস্ট্রিবিউটরদের কমিশন, জিএসটি প্রভৃতি যুক্ত হয়ে বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা হয়। রেশনের কেরোসিনের উপর জিএসটি রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত পশ্চিমবঙ্গের দিকে নজর রেখে করা হয়েছে কি না সেই প্রশ্ন উঠছে। কারণ এখন যে মাত্র ১৬টি রাজ্য কেন্দ্রের কাছ থেকে কেরোসিনের বরাদ্দ নেয় তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ অন্যতম। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গকে কেন্দ্র বেশি পরিমাণে কেরোসিন তেল বরাদ্দ করে আইনি বাধ্যবাধকতার জন্য। সব রাজ্যের জন্য মোট যে পরিমাণ কেরোসিন বরাদ্দ করা হয় তার অর্ধেকের বেশি পশ্চিমবঙ্গ পেয়ে থাকে। কেন্দ্রীয় সরকার চাপ দেওয়া সত্ত্বেও কেরোসিনের বরাদ্দ ছাড়তে রাজি হচ্ছে না রাজ্য সরকার। কেরোসিন ডিলারদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অশোক গুপ্ত বলেন, জিএসটি না কমানোর সিদ্ধান্তে পশ্চিমবঙ্গের গরিব মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এই রাজ্যে মানুষ যাতে কেরোসিন আরও কম কেনে সেই কারণেই নিয়মিত দাম বাড়ানো হচ্ছে বলেই তাঁর অভিযোগ।