• ‘পে লোডারের ডালায় নদী পেরোব, ভাবিনি কখনও!’
    আনন্দবাজার | ০৭ অক্টোবর ২০২৫
  • কত দ্রুত প্রকৃতি বদলে যেতে পারে তা এ বার ডুয়ার্সে এসে বুঝলাম। বলা ভাল, হাড়ে হাড়ে টের পেলাম। বেশ চলছিল পুজোর আনন্দ। কলকাতা থেকে এসে হইহই করে ডুয়ার্স ঘুরছিলাম। জলদাপাড়ার জঙ্গলে ছিলাম। শনিবার রাত থেকে তুমুল বৃষ্টি শুরু হল। রবিবার সকালে দেখলাম, চারিদিকে জল। শুনলাম, হলং নদীর উপরে বাইরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র কাঠের সেতুও ভেঙে গিয়েছে। ভিড় করে এসেছিল ভাবনা। কখনও কি ভেবেছিলাম, পে লোডারের সামনের ডালায় উঠে নদী পার হতে হবে! সোমবার সে ভাবেই হলং নদী পেরোলাম।

    টানা দুর্যোগে বিপর্যস্ত জলদাপাড়ার টুরিস্ট লজে পরিবার নিয়ে দুদিন আটকে থাকলাম। শনিবার রাত যত বাড়ছিল মনে হচ্ছিল, এই বুঝি হাওয়ায় চার পাশের সব গাছপালা উপড়ে যাবে। গোটা বনাঞ্চল যেন পাহাড় থেকে নেমে আসা জলের স্রোতে ভেসে যাবে। জলদাপাড়ার ওই কাঠের সেতুটি বহুদিন ধরেই দুর্বল ছিল। দেখেই মনে হত, এই বুঝি কিছু হয়! কিন্তু মেরামত করা হয়নি। আগেই ব্যবস্থা নেওয়া হলে হয়তো এত সমস্যা হতো না।

    রবিবার কয়েক জন পর্যটককে হাতিতে চাপিয়ে জঙ্গলের ঘুরপথে উদ্ধার করা হয়েছিল। সে হাতিকে নাকি গন্ডার তাড়া করেছিল! বিপদের উপরে বিপদ। এ দিন আমাদের বলা হল, পে লোডারের ডালায় উঠতে। তার পরে, সেটি আমাদের নদী টপকে মূল রাস্তায় পৌঁছে দেবে। একটু অস্বস্তি হচ্ছিল।

    ভয়ে ভয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পে লোডারের ডালায় উঠে বসলাম। পে লোডারের হাতের মতো অংশটি আমাদের নদী পার করিয়ে অন্য পারে নামিয়ে দিল। যখন ডালা নদীর মাঝামাঝি পৌঁছেছে, তখন হাত-পা এক রকম ঠান্ডা।এমন অভিজ্ঞতা আর কারও হোক, তা চাই না। এ যাত্রায় প্রাণে বেঁচে গেলাম।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)