ভোটার তালিকায় ‘ম্যাপিং’-এর কাজে অগ্রাধিকার দিয়েই জেলা কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে চলেছেন জাতীয় নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিরা। আগামিকাল, বুধবার দু’দিনের রাজ্য সফরে এসে দক্ষিণবঙ্গের সর্বস্তরের নির্বাচনী আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করবেন পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র উপ নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতী, কমিশনের তথ্যপ্রযুক্তি শাখার ডিরেক্টর জেনারেল সীমা খন্না, এ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) মনোজ আগরওয়াল-সহ কমিশনের অন্য আধিকারিকেরা। ম্যাপিং-সহ আটটি বিষয় ওই বৈঠকের জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) আগে ম্যাপিংয়ের উপর জোর রয়েছে কমিশনের তরফে। তাতে ২০০২ সালে এসআইআরের প্রকাশিত তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে সর্বশেষ প্রকাশিত ভোটার তালিকা। উভয় তালিকায় থাকা নামগুলি মূল তালিকাভুক্ত হবে। আবেদনপত্র পূরণ করা ছাড়া সংশ্লিষ্টদের নথি-প্রমাণ-যাচাইয়ের প্রয়োজন হবে না। বাকিদের ক্ষেত্রে নথি-প্রমাণ বা যাচাইয়ের প্রয়োজন হবে। নির্ধারিত বৈঠকের আগে এই ম্যাপিং শেষ হয়ে যাবে বলে দাবি কমিশন সূত্রের। এক কর্তার কথায়, “ম্যাপিংয়ে কোনও খামতি থাকলে জবাবদিহি করতে হবে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে। ফলে বিষয়টা হালকা ভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই।”
প্রসঙ্গত, ৮ অক্টোবর সকাল ১০টা থেকে শুরু হতে চলা ওই বৈঠকে হাজির থাকতে হবে দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলার জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক, অতিরিক্ত জেলাশাসক (এডিএম-নির্বাচন), ওসি (নির্বাচন), এসডিও, ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও) এবং জেলাভিত্তিক ন্যাশনাল ইনফর্মেটিক্স সেন্টারের (এনআইসি) প্রতিনিধিদের। উত্তরবঙ্গের বিপর্যয় পরিস্থিতির জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা আধিকারিকদের নিয়ে চলতি মাসের শেষে আলাদা বৈঠক করবে কমিশন।
বুথ স্তরের আধিকারিক (বিএলও) নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণ নিয়েও প্রস্তুতি খতিয়ে দেখবেন কমিশন-কর্তারা। কমিশনের বিধি অনুযায়ী, একমাত্র সরকারি কর্মচারীদেরই বিএলও হিসেবে এ বার নিয়োগ করতে হচ্ছে। কিন্তু অনেক জায়গায় সেই বিধি অমান্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ জমা পড়েছে। ফলে এই সব বিষয় বৈঠকে উঠতে পারে। পাশাপাশি, বিএলও-দের সহযোগিতা করার জন্য স্বেচ্ছাসেবক চিহ্নিত করার বিষয়ে কিছু নির্দেশ দেবেন কমিশন-কর্তারা। নতুন ভোটার আবেদনপত্র (ফর্ম-৬), মৃত ভোটারের নাম বাদ দেওয়া (ফর্ম-৭) এবং ভোটার কার্ডে সংশোধনের (ফর্ম-৮) কাজ খতিয়ে দেখা হবে। বুথ পুনর্বিন্যাসের কাজ নিয়েও জানতে চাইবে কমিশন।
এসআইআরের কাজে এই রাজ্যের জন্য সাত থেকে সাড়ে সাত কোটি আবেদনপত্র (এনুমারেশন ফর্ম) ছাপাতে হবে। সংশ্লিষ্টের ভোটার কার্ডের নম্বরের সঙ্গে আধার নম্বরও রাখা হবে। প্রয়োজনীয় কাগজ এবং প্রিন্টার কী ভাবে জোগাড় হবে, কী পদ্ধতিতে সেই কাজ হবে, তা ব্যাখ্যা করা হবে জেলা কর্তাদের সামনে।