বাড়ি, রাস্তা, ব্রিজ সব তৈরি করে দেওয়া হবে, বিধ্বস্ত মিরিকের দুধিয়া থেকে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর...
আজকাল | ০৭ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বন্যা পরস্থিতি পর্যবেক্ষণে মিরিকের দুধিয়ায় রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সেখানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস ১৫ দিনের মধ্যে মিরিকের দুধিয়ায় সেতু তৈরি করে দেওয়া হবে। তিনি জানান, প্রথমে আধিকারিক জানিয়েছিলেন এক মাস সময় লাগবে সেতু তৈরিতে। পরে স্থির হয়েছে ১৫ দিনের মধ্যেই এটি তৈরি করা হবে। তাঁর আরও আশ্বাস, ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বাড়ি, রাস্তা সব তৈরি করে দেওয়া হবে। এদিন মৃতদের পরিবারের হাতে পাঁচ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণের চেকও তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার বন্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে উত্তরবঙ্গে পৌঁছেছেন মমতা। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস-সহ প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিকরা। গতকালই ঘোষণা করেছিলেন মঙ্গলবার মিরিকে যাবেন। সেই অনুযায়ী মঙ্গলবার দুপুর দেড়টা নাগাদ মিরিকের দুধিয়া পৌঁছন মমতা। শনিবার রাতভর বৃষ্টিতে দার্জিলিংয়ের বিস্তীর্ণ এলাকায় ধস নামে। প্রবল বৃষ্টিতে মিরিকের দুধিয়া সেতুটি ভেঙে যায়। এর পর থেকেই সমতলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এ দিন মিরিকে পৌঁছে দুর্গত পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পরেই প্রতিশ্রুতি মতো মৃতদের পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, মৃতদের পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়া হবে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন, ধসে ভেঙে যাওয়া রাস্তাগুলি আগে মেরামত করতে হবে। তার জন্য ১৫ দিন সময় বেঁধে দিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যে দার্জিলিং-মিরিক সংযোগকারী ভেঙে পড়া দুধিয়া ব্রিজ সংস্কারে পদক্ষেপ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ভাল মানের একটি সেতু তৈরি করা হচ্ছে। তবে ওই সেতুটি তৈরি করতে এক বছর সময় লেগে যাবে। তাই আপাতত এলাকাবাসীদের জন্য ১৫ দিনের মধ্যে একটি বিকল্প সেতু তৈরি করে দেওয়া হবে।
মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নেওয়া দুর্গতদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য সবদিক নজরে রাখতে হবে। আপাতত একমাস কমিউনিটি কিচেন চালানোর নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। এর পাশাপাশি যে সব নথিপত্র নষ্ট হয়ে গিয়েছে তাও ফের তৈরি করে দেওয়া হবে আশ্বাস দিয়েছেন মমতা।
দুর্গতদের মমতা বলেন, “যাঁরা চলে গিয়েছেন, তাঁদের জন্য আমরা কিছু করতে পারব না। যাঁরা নিজেদের লোক হারিয়েছেন তাঁদের জন্য আমি দুঃখিত। কিন্তু যাঁরা হারিয়েছেন তাঁদের পরিবারের জন্য আমরা কিছু করব। পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে এক মাসের মধ্যে। শারীরিক মানদণ্ড, শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে চিন্তা করতে হবে।”
এরপরেই মমতা বলেন, “সকলকে আমি আবেদন করব মাথা ঠান্ডা রাখুন। মাথা গরম করলে কিছুই হয় না। ভুটানের জলে এই পরিস্থিতি হয়েছে। আমাদের জলে এই অবস্থা হয়নি। ভূটানে ৫৬টি নদী রয়েছে। আমি শুনেছি চারটি বাঁধ তারা বন্ধ করে দিয়েছে। বাংলার ভৌগলিক অবস্থান নৌকার মতো। নেপালে বা সিকিমে কিছু হলেই এখানে ভুগতে হয়। সিকিমে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে তিস্তার জলস্রোত কমে যায়। জল ছাড়ালেই তিস্তা ভেসে যায়। দক্ষিণবঙ্গে ডিভিসি জল ছাড়ছে। এখানে ভূটানের এবং সিকিমের নদীর জলের কারণে ভুগতে হয়। পরিবেশ নিয়ে খেলা করা উচিৎ নয়। সিকিমে ১৪টি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র করার অনুমতি দিল কে? নদী আটকে, নিকাশি আটকে দিলে জল বইবে কীভাবে? মিরিক নতুন পাহাড়, সেখানে কিছু তৈরিতে ১০০ বার ভাবতে হবে।“
দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার জেলায় দুর্যোগের কারণে যে কৃষকদের চাষের জমিতে ক্ষতি হয়েছে, তাঁদেরও পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন মমতা।