• স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে পাহাড়, খুলে গেল টাইগার হিল-সান্দাকফু
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৭ অক্টোবর ২০২৫
  • শনিবার রাতভর বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। ভূমিধসে বিধ্বস্ত পাহাড়ে পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে টাইগির হিল, সান্দাকফু, রক গার্ডেনের মতো দর্শনীয় স্থান বন্ধ রাখা হয়। রবিবার জিটিএ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এই সব জায়গায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ভূমিধসের ধাক্কা সামলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে পাহাড়। মাত্র একদিনের মাথায় পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হওয়ায় সোমবার সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। ফলে আবারও প্রাণ ফিরছে পাহাড়ি পর্যটনে। ভিড় বাড়ছে দার্জিলিং ও কালিম্পংমুখী পর্যটকদের।

    তবে পর্যটকদের ফেরার পথে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সিকিম ও দার্জিলিং থেকে ফেরার গাড়ি এবং বিমান ভাড়া নিয়ে নাজেহাল হতে হচ্ছে পর্যটকদের। দার্জিলিং বা গ্যাংটক থেকে বাগডোগরা বিমানবন্দর বা শিলিগুড়ি পর্যন্ত গাড়ি ভাড়ায় চড়া দাম চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। একাধিক পর্যটক জানিয়েছেন, সাধারণ সময়ে ৫-৬ হাজার টাকায় গাড়ি পাওয়া যায়। এখন সেই ভাড়া বেড়ে হয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। যাঁরা বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে উড়ানে ফিরতে চাইছেন তাঁরা আরও বেশি বিপাকে পড়েছেন।

    সোমবার বাগডোগরা থেকে কলকাতাগামী বিমানের ভাড়া বেড়ে ১৫ হাজার টাকা হয়েছে বলে অভিযোগ। কেন এই বাড়তি ভাড়া তার কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। এদিকে দার্জিলিং পাহাড়ে একাধিক জায়গায় ধসের জেরে রেল পরিষেবাতেও প্রভাব পড়েছে। নিরাপত্তার কারণে আগামী ৮ অক্টোবর পর্যন্ত টয় ট্রেনের জয়রাইড পরিষেবা স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে অন্যান্য ট্রেন পরিষেবা আপাতত চালু থাকবে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।

    ট্যুর অপারেটর সংস্থাগুলো সূত্রে জানিয়েছে, এদিন কয়েকশো পর্যটক দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে পৌঁছেছেন। অনেকেই ভ্রমণ সূচি কাটছাঁট করে শিলিগুড়িতে নামছেন। তবে কতজন পর্যটক দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে আটকে পড়েছেন সেই তথ্য সরকারিভাবে মেলেনি।

    পর্যটন পরিস্থিতি নিয়ে আশ্বস্ত করেছেন রাজ্য ইকো ট্যুরিজম কমিটির চেয়ারম্যান রাজ বসু। তাঁর বক্তব্য, ‘এখন পাহাড়ে আটকে পড়ার মতো কোনও পরিস্থিতি নেই। সব রাস্তা খোলা। পর্যটকদের আমরা দার্জিলিং ও কালিম্পং ভ্রমণে আসার অনুরোধ জানাচ্ছি।‘     তিনি আরও বলেন,  ‘রবিবারের জন্য কিছু জায়গায় সাময়িকভাবে দর্শনীয় স্থান বন্ধ রাখা হয়েছিল। কিন্তু এখন সব কিছুই স্বাভাবিক। কেবল বিমান ও গাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত কিছু অভিযোগ এসেছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।‘

    শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের পাহাড়-সহ সমতলে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন। ডুয়ার্সের পরিস্থিতিও হয়ে ওঠে ভয়াবহ। নদীর জলস্রোত বৃদ্ধির ফলে ভেঙে যায় কাঠের সেতু। জলদাপাড়া টুরিস্ট লজে আটকে পড়েন অনন্ত ২৫ জন পর্যটক। সোমবার তাঁদের উদ্ধার করা হয়। অনেক পর্যটক উদ্বেগ থেকে সফর কাটছাঁট করছেন। বেশিরভাগ পর্যটক কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বাসিন্দা। ভিনরাজ্যের পর্যটকও রয়েছে।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)