সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘বিষাক্ত’ কাশির সিরাপ ‘কোল্ডরিফ’ খেয়ে মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা দেশে। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার সিরাপ কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের দাবি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা। আইনজীবী বিশাল তিওয়ারি এই মামলাটি দায়ের করেছেন। তাঁর মূল দাবি, সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে গোটা ঘটনার তদন্ত করা হোক। একইসঙ্গে তাঁর আরও দাবি, ‘বিষাক্ত’ এই কাশির সিরাপকে গোটা দেশে নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি ওষুধের সমস্ত ব্যাচও প্রত্যাহার করে নেওয়া হোক।
মামলাকারীর বক্তব্য, কীভাবে এই নিম্নমানের ‘বিষাক্ত’ কাশির সিরাপের অনুমোদন মিলল, তা খতিয়ে দেখা হোক। শুধু তাই নয়, আগামী দিনে যাতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য কেন্দ্রকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিক সুপ্রিম কোর্ট। তাঁর মতে, গোটা বিষয়টি তদন্ত করতে মোদি সরকারের উচিত জাতীয় বিচার বিভাগীয় কমিশন বা একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা, যার নেতৃত্বে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। কমিটিতে ফার্মাকোলজি, টক্সিকোলজি এবং ওষুধ বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্তির কথাও তিনি বলেছেন। ওই মামলায় আরও একাধিক দাবি করেছেন মামলাকারী। তাঁর বক্তব্য, বিষাক্ত ওই কাশির সিরাপের কারণে বিভিন্ন রাজ্যে শিশুমৃত্যুর ঘটনা সম্পর্কিত সমস্ত এফআইআর এবং তদন্তভার সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতির তত্ত্বাবধানে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হোক। যাতে তদন্তপ্রক্রিয়া নিরপেক্ষ হয়।
গত কয়েকদিন ধরেই কাশির সিরাপ ‘কোল্ডরিফ’ খেয়ে মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়ারা এবং রাজস্থানের সিকার এলাকায় পরপর শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সামান্য জ্বর থেকেই আচমকা কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যু হচ্ছিল তাদের। মধ্যপ্রদেশে এখনও পর্যন্ত ১৪ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জানা যাচ্ছে, জ্বর হলেই অসুস্থ শিশুটিদের সরকারি হাসপাতালে ৬ ঘণ্টার জন্য নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। অবস্থার অবনতি হলে শিশুদের জেলা হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই মধ্যপ্রদেশ-সহ বহু রাজ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ‘কোল্ডরিফ’। মধ্যপ্রদেশে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক চিকিৎসককেও। সাম্প্রতিক একটি পরীক্ষায় ধরা পড়েছে, সিরাপটিতে ৪৮.৬ শতাংশ ডাইথিলিন গ্লাইকল রয়েছে। এই বিষাক্ত রাসায়নিকটির প্রয়োগে শিশুদের কিডনি বিকল হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল থাকে। সেক্ষেত্রে মৃত্যুও হয় চোখের নিমেষে। এই পরিস্থিতিতে এবার সিরাপ কাণ্ড গড়াল সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত।