জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ভয়াবহ বন্যা চলছে উত্তরবঙ্গে। বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। আর ওইসময় মুখ্যমন্ত্রী ব্যাস্ত রয়েছেন কলকাতার পুজো কার্নিভাল নিয়ে! এমনই অভিযোগ তুলে সোচ্চার হয়েছিল বিরোধীরা। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গে বন্যা দুর্গত এলাকা ঘুরে সেই অভিযোগের জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন উত্তরকন্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যেদিন রাতে ঘটনাটি ঘটে সেদিন থেকেই অ্যালার্ট করেছি অনেক মানুষকে। আরও অনেক প্রাণহানি হতে পারত। অনেকে নিজের বাড়ি ছেড়ে যেতে চায় না। ফলে অনেকে হয়তো নিজের বাড়িতে ছিল। নাগরাকাটা লো ল্যান্ড নয়। কিন্তু এতটা ফ্ল্যাস ফ্লাড হয়েছে যে সবকিছু ভেসে গিয়েছে। সেখানেই ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। চার তারিখে ঘটনা ঘটার পর পাঁচ তারিখে ভোর পাঁচটায় চিফ সেক্রেটারি, ডিজি এবং আমার মধ্যে মিটিং হয়। গৌতম বলছে, ওইদিন সকালেই ফায়ার ব্রিগেড, সিভিল ডিফেন্স, পুলিস, হেলথের লোকজন স্পটে ছিল। কোনও বিপর্যয় ঘটে গেলে অন্তত ৪৮ ঘণ্টা দিতে হয় উদ্ধারের জন্য। কার্নিভ্য়াল নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলেছেন তারা আসলে রাজনীতি করছেন। কার্নিভালের সবকিছুই আগে থেকে ঠিক করা থাকে। তাই রাতারাতি তা বাতিল করা সম্ভব নয়। ওই দিনই যদি আমরা উত্তরবঙ্গে আসতাম তাহলে পুলিস-প্রশাসন কাকে সামলাত! কোনটা প্রায়োরিটি! ভিআইপি সামলানো নাকি বিপদে মানুষের পাশে থাকা। কোন কাজটা সামলা দেবে প্রশাসন?
উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গের বন্যার পাশাপাশি বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের উপরে হামলা নিয়ে তোলপাড় রাজনীতি। আজ খগেন মুর্মুকে হাসপাতালে দেখতে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি সাংসদকে দেখে এসে তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
ঘটনার সূত্রপাত গতকাল, সোমবার। জলপাইগুড়ির নাগরাকাটায় দুর্গতদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে জনতার আক্রমণের মুখ পড়েন মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। রেহাই পাননি শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষও। অভিযোগ, রীতিমতো ইট, পাথরের দিয়ে ভাঙচুর চালানো হয় তাঁদের গাড়িতে। স্রেফ বিধায়ক শঙ্করকে ধাক্কা মারাই নয়, পাথরের আঘাতে মাথা ফাটে সাংসদের। রক্তে ভিজে যায় মুখ! প্রবল বিক্ষোভে শেষে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন বিজেপি সাংসদ, বিধায়করা।
এদিকে উত্তরবঙ্গ বিজেপি সাংসদ ও বিধায়কের উপর হামলায় তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি। ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু তাঁর আগে আহত সাংসদকে দেখতে হাসপাতালে চলে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক বা নৈতিক অধিকার কতটা আছে, সে নিয়ে বিতর্কে যেতে চাই না। সৌজন্য় সাক্ষাত্ করতেই পারেন। কিন্তু খগেন মুর্মুকে দেখতে যাওয়ার আগে যদি পিঙ্কি খাতুন গ্রেফতার হত। কিংবা ভিডিয়ো যে মুখগুলি দেখা গিয়েছে, চিহ্নিত তৃণমূল কংগ্রেস, তাঁদের যদি পুলিস গ্রেফতার করত, তাহলে বুঝতাম মুখ্যমন্ত্রী আন্তরিক, তিনি হিংসাকে প্রশয় দিচ্ছে না'।