টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: দপ্তরের আধিকারিকদের কাজে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন সেচ ও জলসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী ড. মানস ভুঁইয়া। হুঁশিয়ারি দিলেন,”কিছু আধিকারিকদের জন্য সরকারের বদনাম মেনে নেওয়া যাবে না। কাজ না করলে ব্যবস্থা অনিবার্য।” বৈঠকে উপস্থিত বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীও রীতিমতো দপ্তরের আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। মঙ্গলবার পুরুলিয়ায় রিভিউ মিটিংয়ের পর বাঁকুড়ার সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসন ও সেচ দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মন্ত্রী ও সাংসদ।
এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়া জেলার সভাধিপতি অনুসূয়া রায়, জেলা শাসক এন. সিয়াদ, জেলার সেচ আধিকারিক, প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগীয় কর্তা ও ইঞ্জিনিয়াররা। সেখানেই মন্ত্রী একাধিক প্রশ্ন তোলেন। ডিভিসির ছাড়া জল ও লাগাতার বর্ষণের জেরে রাইপুরে কংসাবতী সেচনালায় ভাঙন ধরে। সেই ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন মানস ভুঁইয়া। প্রশ্ন তোলেন, “রাইপুরের ক্ষত এত গভীর! অথচ আমার দপ্তর থেকে একটাও রিপোর্ট আমার টেবিলে এল না কেন? এতদিন কী করছিলেন আপনারা?” এরপর রাইপুরেই শ্যামসুন্দরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কংসাবতী সেচ নালা ভাঙনের কথা তুলে ধরেন মন্ত্রী। ক্ষুব্ধ মন্ত্রী প্রশ্ন করেন, “ওই এলাকার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা কী করছিলেন? কেন ভাঙা নালা মেরামতির উদ্যোগ নেওয়া হয়নি?” এরপরই বলেন এই অবহেলার জন্য আধিকারিকদের জন্য কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?” মন্ত্রীর প্রশ্নের উত্তরে কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি আধিকারিকরা।
তালডাংরা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ফাল্গুনী সিংহ একাধিকবার লিখিতভাবে সতর্ক করেছেন নদী ও নালা ভাঙনের বিষয়টি নিয়ে। কিন্তু জেলা সেচদপ্তরের আধিকারিকরা কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ। মন্ত্রীর মন্তব্য, “এটা শুধু অবহেলা নয়, জনগণের জীবনের সঙ্গে খেলা। এভাবে দপ্তরের বদনাম আমি সহ্য করব না।” বৈঠকে উপস্থিত বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীও জেলার আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন । তিনি বলেন, “বর্ষার আগেই গন্ধেশ্বরী নদী সংস্কারের কথা বলেছিলাম। কিন্তু দপ্তরের একাংশের গাছাড়া মনোভাবেই আজ নদ-নদীগুলোর এমন বেহাল দশা।” বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মন্ত্রী ড. মানস ভুঁইয়া জানান, “আজকের বৈঠক ছিল সতর্কবার্তা। দপ্তরের কাজে গতি আনতেই আমি এসেছি। কিছু আধিকারিকের জন্য সরকারের বদনাম মেনে নেব না। কাজ না করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”