বিহারে জোট রাখতে নাকাল বিজেপি, চোখ রাঙাচ্ছে ছোটো-বড়ো সব শরিকই
বর্তমান | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: কেন্দ্রে সরকার বাঁচাতে হলে নীতীশ কুমারকে তুষ্ট রাখতেই হবে। এই হল ফর্মুলা। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে একক গরিষ্ঠতা হারানো বিজেপির কাছে সবথেকে বড় সংকট বিহার। কারণ, বিজেপি বুঝতে পারছে যে, নীতীশ কুমারের সেই আগের মতো জনপ্রিয়তা নেই যা এনডিএ জোটকে অনায়াসে গরিষ্ঠতার কাছে নিয়ে যাবে। এমনকী নীতীশ কুমারকে আবার মুখ্যমন্ত্রী প্রজেক্ট করায় দলের অভ্যন্তরে যেমন ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে, তেমনই বিহারেও এনডিএ টলমলে অবস্থানে। কিন্তু উপায় নেই মোদি ও অমিত শাহের। কেন্দ্রীয় সরকারকে অটুট রাখতে নীতীশকে তুষ্ট রাখতে হবে। নীতীশও বিজেপির এই দুর্বলতা ভালো করে জানেন। তাই বিজেপির রাজ্য সভাপতি যতই বলুন যে, বিহারে এবার সবাই সমান, কোনও বড়ো শরিক-ছোটো শরিক নেই। কিন্তু নীতীশ চান এবারও তাঁর দলকে বড়ো শরিকের মর্যাদা দিয়ে অন্তত একটি হলেও বেশি আসন দেওয়া হোক। প্রাথমিক স্থির হয়েছে ২১০ আসনে বিজেপি ও জেডিইউ লড়বে। বিজেপির ফর্মুলা, প্রধান দুই শরিক অর্থাৎ জেডিইউ ও নিজেরা পাবে সমান আসন। কিন্তু নীতীশের দাবি একটি হলেও তাদের বেশি দিতে হবে।
এখানেই শেষ নয়। বিজেপির কেন্দ্রের দুর্বলতার সুযোগে বিহারের ছোট ছোট এনডিএ শরিকরাও রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে। সবথেকে বেশি বিদ্রোহী মনোভাব নিয়েছেন চিরাগ পাসোয়ান। তিনি ৪৫টি এমন আসন দাবি করেছেন, যা জেতা যাবে। দুর্বল আসন নয়। কিন্তু বিজেপি চিরাগের দলকে ২০ থেকে ২৫-এর বেশি দিতে রাজি নয়। মনে করা হচ্ছিল, চিরাগ পাসোয়ান শুধু যে দর কষাকষির খেলায় মেতেছেন। কিন্তু মঙ্গলবার জানা যাচ্ছে, জেদ বজায় রেখে তিনি এনডিএ ছেড়ে প্রশান্ত কিশোরের দলের সঙ্গে জোট করতে পারেন। এই জল্পনা মঙ্গলবার সকাল থেকে ছড়িয়ে যায় বিহারে। সেটা যদি সত্যি হয়, তাহলে বিহারের ভোটপর্ব চরম আকর্ষণীয় হবে। কারণ পাসোয়ান ও মহাদলিত কিছু ভোটব্যাঙ্ক আছে চিরাগের দলের কাছে। বিজেপি সেটা হাতছাড়া হতে দেবে না। সুতরাং তাঁকে জোটে রাখতে হলে মোদি ও অমিত শাহকে আসন সমঝোতায় আপস করতেই হবে। পক্ষান্তরে জিতনরাম মাঝি, উপেন্দ্র কুশওয়াও নীরব নেই। তাঁদের দাবি অন্তত ১০ থেকে ২০টি করে আসন। যদিও এই দুই দলকে বিজেপি ৫ থেকে ৮টি আসনের বেশি দিতে রাজি নয়। সোজা কথায়, এই প্রথম আসন সমঝোতা নিয়ে নাকাল বিজেপি। কারণ একটাই। ২০২৪ সালে লোকসভায় এককভাবে গরিষ্ঠতা না পাওয়া।