মুসলিম মহিলার সন্তান প্রসবে আপত্তি সরকারি চিকিৎসকের
বর্তমান | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
লখনউ: ধর্মে মুসলিম তাই সরকারি হাসপাতালেও মিলল না চিকিৎসাও! এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে যোগীরাজ্যে। শুধুমাত্র মুসলিম হওয়ার কারণে এক মহিলার সন্তান প্রসব করাতে অস্বীকার করেন এক সরকারি চিকিৎসক। শুধু তা-ই নয়, সেই খবর করার জন্য স্থানীয় দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধেও দায়ের হয়েছে এফআইআর। উত্তরপ্রদেশের জৌনপুর জেলা হাসপাতালের ঘটনাটি প্রকাশ্যে এসেছে গত ১ অক্টোবর। সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ তুলেছেন শামা পারভীন নামে ওই মহিলা। জৌনপুর জেলা হাসপাতালের এক চিকিৎসক নাকি তাঁকে বলেছেন, ‘আমি কোনও মুসলিম মহিলার চিকিৎসা করব না। আমি আপনার ডেলিভারি করব না। অন্য কোথাও যান।’ নার্স যাতে শামাকে অপারেশন থিয়েটারে না নিয়ে যান, সেই নির্দেশও দিয়েছিলেন ওই চিকিৎসক।
যাবতীয় অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন হাসপাতালের চিফ মেডিকেল সুপারিন্টেন্ডেন্ট মহেন্দ্র গুপ্ত। তিনি বলেন, ৩০ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ হাসপাতালে আনা হয়েছিল ওই মহিলাকে। রাতের ডিউটিতে থাকা মহিলা চিকিৎসক তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করেছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিও দেখেই সেই রাতের কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়। তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এই নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সংক্রান্ত ভিডিও পোস্টের জেরে দুই স্থানীয় সাংবাদিক — ময়ঙ্ক শ্রীবাস্তব এবং মহম্মদ ওসমানের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। অভিযোগ, জোর করে ওই দুই সাংবাদিক লেবার রুমে ঢুকে বিনা অনুমতিতে ভিডিও রেকর্ডিং করেন। তাঁরা হাসাপাতালের সম্পত্তি নষ্ট করেছে বলেও পুলিশের দাবি। এই ঘটনার জল গড়িয়েছে অনেক দূর। সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক রাগিনী সোনকার বলেন, ‘এই ঘটনা লজ্জাজনক। সারা রাজ্যে যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা রয়েছে, এই ঘটনা তারই প্রতিফলন। প্রসব বেদনা ওঠা কোনও মহিলাকেই চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা যায় না।’ অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে কেন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কেন এফআইআর করা হল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। কংগ্রেস নেতা বিকাশ উপাধ্যায় ভিক্কিও এই ঘটনার নিন্দা করেছেন। তবে সব অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপি মুখপাত্র অবিনাশ ত্যাগী বলেন, ‘যোগী সরকারের আমলে সবকা সাথ, সবকা বিকাশ মন্ত্রে কাজ হয়। কাউকে কোনও পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা হয় না।’