• ফের মোদির চাকরির ফানুস ফুটো, পিএফে গ্রাহক কমেছে ৯ লক্ষ
    বর্তমান | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
  • দিব্যেন্দু বিশ্বাস, নয়াদিল্লি: কর্মসংস্থান ঘিরে একের পর এক প্রতিশ্রুতি। ভোটের হাওয়া গরম হলেই যা বাড়তে থাকে লাফিয়ে। কিন্তু বাস্তব? বছরে দু’কোটি চাকরির গালভরা আশ্বাস হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়েছে। পাকাপাকি নিয়োগের বহর ইন্টার্ন এবং অগ্নিবীরের পর্যায়ে নেমে এসেছে। আর এবার খোদ কেন্দ্রীয় সরকারি পরিসংখ্যানেই প্রকাশ, দু’বছরের ব্যবধানে সারা দেশে সামগ্রিকভাবে প্রায় ন’লক্ষ গ্রাহক কমে গিয়েছে কর্মী পিএফে (ইপিএফ)। 

    শর্তসাপেক্ষে দেশের বেসরকারি সংস্থা-প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাই ইপিএফের মতো সামাজিক সুরক্ষা পরিষেবার আওতায় থাকেন। তাই সার্বিকভাবে ইপিএফ গ্রাহকের সংখ্যা কমে যাওয়ার সহজ হিসেবই হল, বেসরকারি সংস্থা-প্রতিষ্ঠানগুলিতে ক্রমশ কাজের সুযোগ হারাচ্ছেন কর্মচারীরা। স্বাভাবিকভাবেই এহেন কেন্দ্রীয় সরকারি পরিসংখ্যান প্রকাশ পেতে রীতিমতো চাপে পড়ে গিয়েছে কেন্দ্র। ২০২২-২৩ আর্থিক বছর থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষ। এই দুটো বছরের ব্যবধানেই সারা দেশে ইপিএফ গ্রাহকের সংখ্যা কমে গিয়েছে ৮ লক্ষ ৭৩ হাজার ৫২১। শ্রমমন্ত্রকের আওতাধীন কর্মচারী ভবিষ্যনিধি সংগঠনের (ইপিএফও) সাম্প্রতিক (সেপ্টেম্বর, ২০২৫) পে-রোল ডেটা সংক্রান্ত রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে সারা দেশে মোট ইপিএফ সদস্যর সংখ্যা (অর্থাৎ, নেট পে-রোল) ১ কোটি ৩৮ লক্ষ ৫১ হাজার ৬৮৯। ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৩১ লক্ষ ৪৮ হাজার ২০৪’এ। তার পরের অর্থবর্ষে ইপিএফের ‘নেট’ পে-রোল লক্ষণীয়ভাবে আরও কমেছে। ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে এই সংখ্যা হয়েছে ১ কোটি ২৯ লক্ষ ৭৮ হাজার ১৬৮। প্রত্যাশিতভাবেই এহেন কেন্দ্রীয় সরকারি খতিয়ানকে অত্যন্ত ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করছে তথ্যাভিজ্ঞ মহল। ১৮ বছরের কম বয়সি, ১৮ থেকে ২১ বছর, ২২ থেকে ২৫ বছর, ২৬ থেকে ২৮ বছর, ২৯ থেকে ৩৫ বছর এবং ৩৫ বছরের ঊর্ধ্বে—বয়সের এই ছ’টি ক্যাটিগরিতে ভাগ করেই ‘নেট’ পে-রোল ডেটা প্রকাশ করে ইপিএফও। 

    তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, একইসঙ্গে ইপিএফের মতো সামাজিক সুরক্ষা পরিষেবার আওতা থেকে বেরিয়ে যাওয়া সদস্যর সংখ্যাও উল্লিখিত তিনটি অর্থবর্ষে ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২-২৩ বর্ষে ১ কোটি ৩৩ লক্ষ, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ১ কোটি ৪৯ লক্ষ এবং ২০২৪-২৫’এ ১ কোটি ৮৩ লক্ষ সদস্য ইপিএফও ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। তবে তাঁরা চাকরি খুইয়ে বেরিয়েছেন, নাকি স্বেচ্ছায় ইপিএফ ছেড়ে দিয়েছেন—তা রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট নয়। যদিও কারণ যাই হোক না কেন, এই পরিসংখ্যানও মোদি সরকারের জন্য যথেষ্ট অস্বস্তিকর। অন্তত এমনই ব্যাখ্যা বিশেষজ্ঞ মহলের। কর্মসংস্থানে জোর দিতে ইতিমধ্যেই ইএলআই স্কিম বা কর্মসংস্থান-ভিত্তিক উৎসাহ ভাতা প্রদানের ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। তবে কাজের কাজ কিছু হবে কি?
  • Link to this news (বর্তমান)