আবেদন করেও কাদের নাম বাদ, ৯ তারিখের মধ্যে জানান, বিহারে এসআইআর ইস্যুতে ফের নির্বাচন কমিশনকে তোপ সুপ্রিম কোর্টের
বর্তমান | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: আবেদন করেও ভোটার তালিকায় নাম বাদ পড়ার ইস্যুতে মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনকে ফের পড়তে হল সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে। আবেদন করা সত্ত্বেও নাম বাদ গিয়েছে কেন? কোন যুক্তি বা নিয়মে? তাঁদের বিস্তারিত পরিচয় কী? এই প্রশ্নগুলোই তীব্র হয়ে উঠল এসআইআর সংক্রান্ত সওয়াল-জবাব এবং আদালতের পর্যবেক্ষণে। এমনকী, আগামী বৃহস্পতিবারের (৯ অক্টোবর) মধ্যে শীর্ষ আদালতে তালিকা জমা করার নির্দেশও দিল বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ। ওইদিন বিকাল পৌনে চারটের সময় ফের শুনানি হবে। বিহারে স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশনের (এসআইআর) খসড়া তালিকার নিরিখে চূড়ান্ত তালিকায় যুক্ত হয়েছে ২১ লক্ষ ৫৩ হাজারের নাম। বাদ গিয়েছেন ৩.৬৬ লক্ষ ভোটার। কেন বাদ দেওয়া হয়েছে তাঁদের? কমিশন তা স্পষ্ট করেনি বলেই এদিন আদালতে অভিযোগ করেন মামলার মূল আবেদনকারী অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মসের (এডিআর) আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। অন্য আবেদনকারীদের পক্ষেও আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেন, ‘যাঁদের নাম বাদ গিয়েছে, তাঁদের কোনও নোটিশ দিয়ে পর্যন্ত জানানো হয়নি।’ যদিও কমিশনের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদীর সওয়াল, ‘চূড়ান্ত তালিকা যখন বেরিয়েই গিয়েছে, সেখানেই তো দেখা যাবে কার নাম আছে, কার নেই।’
‘কিন্তু কেন নেই? সেটাই তো প্রশ্ন।’ শুনানির পর্যবেক্ষেণের এমনই মন্তব্যে কমিশনকে চেপে ধরেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। বলেন, ‘একটা ধোঁয়াশা (কনফিউশন) তৈরি হয়েছে। কাদের নাম বাদ গিয়েছে, কাদের নাম যুক্ত হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এ ধরনের বিভ্রান্তি হওয়া ঠিক নয়। প্রথমে ৬৫ লক্ষ লোকের নাম বাদ গেল। তারপরে আবার নতুন নাম যোগ হয়েছে। নতুন যে সব নাম তালিকায় স্থান পেয়েছে, সেগুলি কি খসড়া তালিকায় বাদ পড়া? নাকি সম্পূর্ণ নতুন?’ জবাবে কমিশনের আইনজীবী বলেন, সিংহভাগই নতুন। প্রথমবারের ভোটার। তখনই বিচারপতি বাগচী বলেন, ‘কমিশনের কাছে তো দুটো তালিকাই রয়েছে। খসড়া এবং ফাইনাল। ফলে দু’টি মেলালেই তো বোঝা যাবে কাদের নাম খসড়ায় ছিল না, আর কাদের নাম ফাইনাল তালিকায় যুক্ত হয়েছে। সেটা দিতে অসুবিধে কোথায়? এসআইআর, এমন প্রক্রিয়া হওয়া উচিত, যেখানে জনগণের আস্থা বাড়ে।’
একইভাবে বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, ‘না জানিয়ে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে—এমন অভিযোগ যদি আদালতে করেন এবং তার পক্ষে তথ্য থাকে, আমরা কিন্তু কমিশনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেব।’ সঙ্গে সঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ জানান, এমন অনেক লোক আছে। একজনের আবেদনের উদাহরণও তিনি তুলে ধরেন। বলেন, ‘পরের দিনের শুনানিতে ১০০ জনের নামের তালিকা জমা দিতে পারি। কত চান?’ শীর্ষ আদালত তাঁকে নাম জমা দিতে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে কমিশনকেও বলেন, ‘যে ৩ লক্ষ ৬৬ হাজার ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে, তাঁদের তালিকাও তৈরি করুন। জমা দিন।’