• জলমগ্ন ১৮ হাজার ৪৫২ হেক্টরের বেশি কৃষিজমি, বিপর্যস্ত জেলায় বাংলা শস্যবিমা ক্যাম্প
    বর্তমান | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাস্তায় ধসের কারণে এখনও বহু জায়গায় পৌঁছানো যায়নি। তবে প্রাথমিক সমীক্ষা অনুযায়ী প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উত্তরবঙ্গের চার জেলায় ১৮ হাজার ৪৫২ হেক্টরের বেশি কৃষিজমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। যার জেরে শাক সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। কিছুটা হলেও ধান চাষে ক্ষতির বিষয়টিও উড়িয়ে দিচ্ছে না প্রশাসনিক মহল। তবে জল না নেমে যাওয়া পর্যন্ত ধান চাষের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে কিছু বলা সম্ভব নয় বলেই মত বিশেষজ্ঞ মহলের। ভুট্টা চাষের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কি না, সেদিকেও নজর রয়েছে প্রশাসনের। সব থেকে বেশি কৃষিজমিতে জল ঢুকেছে জলপাইগুড়ি জেলায়। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী এই জেলায় প্রায় ১৩ হাজার ৯৫৩ হেক্টর জমিতে জল ঢুকেছে। আলিপুরদুয়ারে ৩,৪৯৫ হেক্টর, দার্জিলিংয়ে ৫৮২ হেক্টর এবং কোচবিহারে ৪২২ হেক্টর কৃষিজমি জলমগ্ন হয়েছে। 

    কৃষকদের এই ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছে রাজ্য প্রশাসন। বাংলা শস্য বিমায় নাম নথিভুক্তিকরণের জন্য উত্তরবঙ্গের এই জেলাগুলিতে সোমবার থেকেই চালু করা হয়েছে বিশেষ ক্যাম্প। কৃষিদপ্তরের আধিকারিক-কর্মীরা এলাকায় এলাকায় পরিদর্শনে গিয়ে সরাসরি চাষীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের বাংলা শস্য বিমা প্রকল্পে নাম তুলতে সহযোগিতা করছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো বুধবার সকালেই উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী তথা কৃষি বিশেষজ্ঞ প্রদীপ মজুমদার। বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে কৃষি ক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কিত রিপোর্ট দেবেন তিনি। বর্তমানে কৃষি সচিব ওঙ্কার সিং মিনাও আছেন উত্তরবঙ্গে। ত্রাণ কার্য তদারকি করার পাশাপাশি বাংলা শস্য বিমার বেশ কয়েকটি ক্যাম্পও পরিদর্শন করেছেন তিনি। কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু কৃষি জমি থেকে জল নামতে শুরু করেছে। যে সমস্ত কৃষি জমিতে মাটি বা বালির পলি পড়েছে, সেই পলি দ্রুত নামানোর কাজও শুরু করে দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। তবে যে জমিতে ডলোমাইটের আস্তরণ জমেছে, ভবিষ্যতে সেখানে চাষ কতটা করা যাবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন কৃষকরা। 

    এছাড়াও উত্তরবঙ্গের এই জেলাগুলিতে সাধারণ মানুষের কাছে ন্যায্যমূল্য শাক সবজি সরবরাহ করতে কৃষি বিপণন দপ্তরের তরফে অতিরিক্ত ২৯টি চলমান সুফল বাংলা স্টল চালু করা হয়েছে। আবার সুফল বাংলার বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে ১৫০ কুইন্টাল আলু বিভিন্ন রিলিফ ক্যাম্পে সরবরাহ করা হয়েছে। পাহাড়ের রিলিফ ক্যাম্পগুলিতেও আলু পাঠানো হয়েছে সুফল বাংলা কতৃপক্ষের তরফে। অন্যদিকে, বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের তরফে নবান্ন থেকে বিপর্যস্ত জেলাগুলিতে প্রায় ২ লক্ষ ৩০ হাজার ত্রিপল এবং ২ লক্ষ ৪৪ হাজার পোশাক পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও, পাঠানো হয়েছে পাঁচ হাজার ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট কিট। যার মধ্যে রয়েছে স্টোভ থেকে শুরু করে রান্নার বাসনও।
  • Link to this news (বর্তমান)