বিপর্যয়ের দু’দিন পার, এখনও ধসের মাটি-পাথরের তলায় তাবাকোশি গ্রাম
বর্তমান | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: রাস্তা ভাঙা। বাড়ির চাল পর্যন্ত বালি, পাথরের ঢিবি। বৃষ্টির দাপট কমার দু’দিন পরও এমন চিত্র ধরা পড়েছে সুখিয়াপোখরির তাবাকোশি গ্রামে। আজ, বুধবার ওই গ্রামে নামবে প্রশাসনের টিম। আর্থ মুভার দিয়ে গ্রামের রাস্তা পরিষ্কার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দার্জিলিংয়ের মহকুমা শাসক রিচার্ড লেপচা বলেন, ইতিমধ্যে ওই গ্রামে যাতায়াত করার কিছু রাস্তা পরিষ্কার করা হয়েছে। শীঘ্রই গোটা গ্রাম পুনর্গঠনের কাজে হাত দেওয়া হবে।
দার্জিলিং পাহাড়ের পর্যটন কেন্দ্রগুলির মধ্যে তাবাকোশি অন্যতম। সুখিয়াপোখরি ব্লকে ওই গ্রাম রংভং নদীর তীরে অবস্থিত। এখানে বেশকিছু হোমস্টে গড়ে উঠেছিল। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য ওই স্পট বেছে নিতেন পর্যটকরা। শনিবার রাতের ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে গ্রামটি এখন চেনা দায়। এখনও সেই গ্রাম স্বাভাবিক হয়নি। বহু বাড়ি ও হোমস্টে পাথরের স্তূপে চাপা পড়ে রয়েছে। রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় যাতায়াতের মতো পরিস্থিতি নেই।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ বলেন, মেঘ ভাঙা বৃষ্টি, ধস ও রংভং নদীর জলে গোটা গ্রাম কার্যত ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। হোমস্টে, বাড়ি, রাস্তা পাথরের তলায়। তাঁদের অভিযোগ, বিপর্যয়ের দু’দিন পরও প্রশাসন বাড়িগুলি থেকে ধসের মাটি, বালি সাফাই করার কাজ শেষ করতে পারেনি।
প্রশাসন অবশ্য স্থানীয়দের অভিযোগ মানতে নারাজ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মিরিক ও দার্জিলিং মহকুমার সীমানায় অবস্থিত ওই গ্রামটিতে ৬০টির মতো বাড়ি রয়েছে। সেখানে রয়েছে বেশকিছু হোমস্টে। সেগুলির মধ্যে বেশকিছুর রেজিস্ট্রেশনও ছিল না। দুর্যোগের দিন থেকে ওই গ্রামে রয়েছেন প্রশাসনের কর্মীরা। ইতিমধ্যে সেখান থেকে ৭০ জন পর্যটককে উদ্ধার করে নিরাপদে শিলিগুড়িতে পাঠানো হয়েছে। এজন্য দু’দিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে গ্রামীণ রাস্তাগুলির ধস পরিষ্কার করা হয়েছে। কাজেই প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির যে অভিযোগ করছেন বাসিন্দারা, তা একদমই ঠিক নয়।
আজ, বুধবার ওই গ্রামটিতে ফের প্রশাসনের একটি টিম পরিদর্শন করবে। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, গ্রামটি থেকে ধসের বালি, পাথর, মাটি সরানোর জন্য আর্থ মুভার জোগাড় করা হয়েছে। স্থানীয়দের সহযোগিতাতেই সেখানে সাফাই ও মেরামতির অভিযান চালানো হবে। গ্রামটি পুনর্গঠন করতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। এর বাইরে দার্জিলিং পাহাড়ের আরও কিছু গ্রাম এখনও বিপর্যয় বিধ্বস্ত হয়ে রয়েছে। সেগুলিতে থেকেও ধস সরানোর কাজ চলছে। এজন্য বেশকিছু টিম ময়দানে নামানো হয়েছে। তবে, অধিকাংশ রাজ্য ও জাতীয় সড়ক স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে।