• মহম্মদবাজারে মহিলাকে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুন, থানায় আত্মসমর্পণ অভিযুক্তের
    বর্তমান | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: সোমবার গভীর রাতে দূর সম্পর্কের দিদিকে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে খুনের অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর ওই যুবক আত্মসমর্পণ করতে নিজেই থানায় পৌঁছয়। এই ঘটনায় মহম্মদবাজার থানার ভাঁড়কাটা পঞ্চায়েতের শালডাঙায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, কুড়ুলের আঘাতে জাসমিন বেশরা(৪২) নামে ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে পুলিশ অভিযুক্ত সীতারাম হেমব্রমের বাড়ি থেকে মহিলার দেহ উদ্ধার করেছে। ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে খুনের কথা স্বীকার করেছে। আজ, বুধবার অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হবে। তবে কী কারণে এই খুন তা নিয়ে একাধিক তত্ত্ব সামনে আসতে শুরু করেছে। ভয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন গ্রামবাসীরা। পুলিশ অবশ্য পুরনো অক্রোশের জেরে এই খুন বলে দাবি করছে।

    জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার তাকে আদালতে তোলা হবে। তাকে হেফাজতে নিয়ে খুনের ঘটনার কিনারা করতে চাইছি আমরা। জানা গিয়েছে, সোমবার গভীর রাতে খুনের ঘটনাটি ঘটেছে। জাসমিন বেশরা নামের ওই মহিলা সীতারাম হেমব্রমের দূর সম্পর্কের দিদি হয় বলে পরিবার সূত্রের দাবি। দু’জনের বাড়ির দূরত্ব মেরেকেটে ৫০মিটার। একে অপরের বাড়িতে যাতায়াতও ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, জাসমিন অবিবাহিত ছিলেন। বাড়িতে বৃদ্ধ মায়ের সঙ্গে থাকতেন। সীতারাম অবশ্য বিবাহিত। বাড়িতে তার স্ত্রী, সন্তান রয়েছে। যদিও খুনের ঘটনার পর থেকে স্ত্রী ও ছেলে বেপাত্তা।

    পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের বাড়ির উঠান থেকে মহিলার রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। মহিলার পরনে ছিল লাল পাড় সাদা শাড়ি। প্রশ্ন উঠছে, গভীর রাতে ওই মহিলা সীতারামের বাড়িতে কেন গিয়েছিলেন? তাছাড়া, সীতারাম কেন মহিলাকে খুন করল? মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই মহিলার উপর সীতারামের পুরনো আক্রোশ ছিল। সেকারণেই সে খুন করেছে। সীতারামই নাকি গভীর রাতে মহিলাকে নিজের বাড়িতে ডেকেছিল। 

    পুলিশের একটি সূত্রের আবার দাবি, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সীতারাম জানিয়েছে, গভীর রাতে ওই মহিলা হঠাৎই তার বাড়িতে আসে। সেই সময় সে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে বেরিয়েছিল। এত রাতে এক মহিলাকে বাড়ির মধ্যে দেখে ভূতের ভয় পায় সে। তাই হাতের সামনে থাকা কুড়ুল দিয়ে থেঁতলে মহিলাকে খুন করে সে। ওই মহিলা যুবকের দূর সম্পর্কের দিদি হওয়া সত্ত্বেও গভীর রাতে কেন সে চিনতে পারল না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনগুলির দাবি, আদিবাসীদের মধ্যে ডাইনি সন্দেহে খুনের প্রবণতা রয়েছে। এক্ষেত্রেও সেরকম কোনও বিষয় রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখুক পুলিশ। 

     ঘটনাস্থলে পুলিশ। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)